জলপাইগুড়ি , 22 অগাস্ট : জ্বর, শ্বাসকষ্ট । তার উপর মুখে স্বাদ নেই । সবগুলিই কোরোনার উপসর্গ । বেশ কয়েকদিন ধরে একইভাবে ভুগছিলেন জলপাইগুড়ি আশ্রমপাড়ার এক ফাস্ট ফুডের দোকানদার । পরিবারে স্ত্রী, সন্তান ছাড়া আর কেউ নেই । তাই আর ঝুঁকি নিতে চাননি । অবশেষে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । সেই অনুযায়ী , অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে যোগাযোগও করেন । কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । কোনও অ্যাম্বুলেন্স বা কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে আসেনি । তাই বাধ্য হয়েই এলাকার যুব তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অজয় সাহাকে সমস্যার কথা জানান । তিনিই তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন ।
জলপাইগুড়ি শহরে বেড়েই চলেছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । আর যাঁদের উপসর্গ রয়েছে , তাঁরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন । কারণ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ন্যূনতম অ্যাম্বুলেন্স , টোটো বা কোনও যানবাহনের পরিষেবা পাচ্ছেন না তাঁরা । আর সেইসময় তাঁদের দিকে বারবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা গিয়েছে অজয় সাহাকে । আগেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে PPE কিট পরে কোরোনা রোগীকে নিজের বাইকে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে । এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি । ওই দোকানদারের একটা ফোন পেয়েই তিনি এগিয়ে আসেন । কোরোনা হাসপাতালের সারি বিভাগে ভরতি করান ।
কোরোনা উপসর্গ রোগীকে বাইকে চাপিয়ে হাসপাতালে যুব তৃণমূল নেতা শারীরিকভাবে দুর্বল ওই দোকানদার জানান , "হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করি । কোরোনার লক্ষণ থাকায় তারা আসবে না জানিয়ে দেয় । এমনকী, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা চার হাজার টাকা চায় । তাই বাধ্য হয়েই সমাজসেবক তথা জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করি । তিনি PPE কিট পরে মোটরবাইকে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন ।"
অজয় সাহা জানান , "এটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য । এই ব্যক্তি সমস্যায় পড়েছেন । আমাদের বাংলার যুবশক্তি সমাজ সেবার কাজে যুক্ত আছি । কোরোনায় আক্রান্ত বা লক্ষণ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন সংগঠনের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । বিষয়টি জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে জানাই । তারপর ওই ব্যক্তিকে কোরোনা হাসপাতালে পৌঁছে দিলাম । আগামী দিনেও এই কাজ করে যাব ।"
সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার বিষয়ে জেলা হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর জানিয়েছেন , আগে অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল । যারা কোরোনা পজ়িটিভ তাদের হাসপাতালে আনা ও হাসপাতাল থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে । তবে যাদের পরীক্ষা হয়নি তাদের এই পরিষেবা দেওয়ার কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি ।