হাওড়া, 20 অক্টোবর:একটা সময়েকালীপুজো মানেই ছিল শুধু শব্দবাজি । আর সেই শব্দবাজিতে সবাইকে টেক্কা দিত 'বুড়িমার চকোলেট বোম' (Burima Firecrackers)। হাওড়ার প্রসিদ্ধ এই বুড়িমার নাম প্রায় সকলেই শুনেছেন । তবে বুড়িমার নামের পিছনে রয়েছে হার না মানা এক সংগ্রামের কাহিনী ।
বুড়িমার চকোলেট বোমের প্যাকেটে যাঁর ছবি দেখতে পান, তাঁর প্রকৃত নাম অন্নপূর্ণা দাস । তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ফরিদপুরের বাসিন্দা । 1948 সালে স্বামী সুরেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর দেশভাগের সময় ওখান থেকে ভিটেছাড়া হয়ে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই বঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার ধলদিঘিতে চলে আসেন । ঠাঁই নেন একটি রিফিউজি ক্যাম্পে । এরপর নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে চলে এক অদম্য লড়াই ।
বেলুড়ে বাড়ি কিনে সেখানেই তিনি শুরু করলেন বাজির কারখানা । পরে নানা ধরনের আতশবাজি তৈরি করলেও সব চেয়ে বিখ্যাত ছিল তাঁর কারখানার বুড়িমার চকোলেট বোম । বুড়িমা জীবিত না থাকলেও তাঁর এই বাজির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বুড়িমার নাতি সুমন দাস । তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশাসনের নির্দেশে শব্দবাজি সবই নিষিদ্ধ । একটি সময় ছিল, যখন বুড়িমার শব্দবাজির চল ছিল একচেটিয়া । এখন সেই শব্দবাজি নিষিদ্ধ হলেও তাঁরা বাজারে নিয়ে এসেছেন পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি । বর্তমানে এই সবুজ বাজির মূল্য শব্দবাজির তুলনায় অনেক গুণ বেশি । তাই এই সমস্ত বাজি সরকারি অনুমতিতে চললেও তা কিনতে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই । সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে শব্দবাজি আর তাঁরা তৈরি করছেন না ।