তারকেশ্বর, 10 এপ্রিল : এক কিশোরকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামীর বিরুদ্ধে। তারকেশ্বর থানার বালিগড় অঞ্চলের বাসুদেব গ্রামের ঘটনা। মৃত কিশোরের নাম সৌরভ পাত্র। সে ক্লাস টেনের ছাত্র। অভিযুক্ত রাজেশ দাস পঞ্চায়েত সদস্য কাজল দাসের স্বামী। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। এই ঘটনার পর BJP-র তরফে থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে তারকেশ্বর পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত থানায় এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখায়।
গতকাল সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টির পরে সৌরভের বাড়ির চালে ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়ে। এরপর সৌরভের বাবা অরূপ পাত্র ট্রান্সফরমারে তালা দিয়ে দেয়। তারপর তিনি তারকেশ্বর থানায় গিয়ে ঘটনার কথা জানান। অরূপবাবু থানা থেকে ফেরার পর রাজেশ দাস তাঁর বাড়িতে যায়। ট্রান্সফরমারে তালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু'জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। রাজেশ অরূপবাবুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তখন সৌরভ পাত্র বাবাকে বাঁচালে এগিয়ে যায়। অরূপবাবুর অভিযোগ, রাজেশ সৌরভকে মারধর করে। সঙ্গে সঙ্গে সৌরভ মাটিতে পড়ে যায়। তারকেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা সৌরভকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কান্নায় ভেঙে পরলেন সৌরভের মা অরূপ পাত্র বলেন, "আমি কলকাতায় থাকি। বাড়ির থেকে ফোন করে বলে ঝড়ে আমার বাড়ি ভেঙে গেছে। বাড়ি ফিরে দেখি বাড়ির চালে ইলেকট্রিকের তার পড়ে আছে। বিপদ এড়াতে আমি ট্রান্সফরমার বন্ধ করে তালা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থানায় গিয়ে ঘটনার কথা জানাই। রাতে রাজেশ দাস এসে আমায় বেধড়ক মারধর করে। আমি থানায় যাব বলাতে রাজেশের ভাই বিশ্বজিৎ দাস আমার কলার ধরে চড় মারে। এরপর আমার ছেলে সৌরভ এগিয়ে যায়। সৌরভকে বুকে ঘুষি মারে। এরপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ডাক্তাররা বলেন সৌরভের মৃত্য হয়েছে। রাজেশের শাস্তি চাই।"
পুলিশ অভিযুক্তের ভাই বিশ্বজিৎ দাসকে আটক করেছে। রাজেশ দাসের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে BJP-র পক্ষ থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে তারকেশ্বর পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত থানায় এলে তাকেও ঘিরে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখায়। প্রায় তিনঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের BJP প্রার্থী তপন রায় মৃতের পরিবারের সাথে দেখা করেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।