পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Rabindranath and Motichur: বিখ্যাত মতিচুর সন্দেশের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রবি ঠাকুরের নাম, স্মৃতি রোমন্থনে চন্দননগরবাসী

বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 162তম জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে হুগলির চন্দননগরে ৷ এই শহরের সঙ্গে রবিঠাকুর ও তাঁর পরিবারের বিশেষ যোগ ছিল ৷ আরও একবার স্মৃতিবিজরিত সেই ঘটনা সামনে আনলেন হুগলিবাসী ৷

Rabi Thakur And Motichur Sandesh
মতিচুর সন্দেশের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রবি ঠাকুরের নাম

By

Published : May 9, 2023, 9:53 PM IST

Updated : May 9, 2023, 10:15 PM IST

মতিচুর সন্দেশের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রবি ঠাকুরের নাম

চন্দননগর, 9 মে: আজ 25শে বৈশাখ, কবিগুরুর 162তম জন্মদিন ৷ সাহিত্যের আনাচাকানাচে যেমন রবি ঠাকুরের অবাধ যাতায়াত ছিল তেমনি খাওয়া-দাওয়ার দিক থেকে বেজায় রসিক ছিলেন তিনি ৷ ফলে হুগলির বিখ্যাত মিষ্টি মতিচুরের সঙ্গেও নাম জড়িয়ে রয়েছে কবিগুরুর ৷ হুগলি নদীর তীরের চুঁচুড়া চন্দননগর শহরের সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। রবীন্দ্রনাথের বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দাদা যতীন্দ্র নাথও থেকেছেন চুঁচুড়ার দত্ত ভিলাতে। রবি ঠাকুরের জন্মদিনে স্মৃতির পাতা থেকে উঠে এসেছে একাধিক গল্প ৷

জানা গিয়েছে, চন্দননগরের পাতাল বাড়িতে বসে উপন্যাস রচনা করেছেন বিশ্ব বরেণ্য সাহিত্যিক। বউ ঠাকুরানীর হাট উপন্যাস তিনি রচনা করেছিলেন এই পাতাল বাড়ি থেকেই। শুধু তাই নয়, চন্দননগরের প্রাণপুরুষ হরিহর শেঠের আমন্ত্রণেও চন্দননগরে আসতেন তিনি। মতিলাল রায়ের প্রবর্তক সংঘের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল তাঁর। 1926 থেকে 1935 পর্যন্ত প্রবর্তক আশ্রমে তিনবার আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আশ্রমের জীবন ও আধ্যাত্মিকতার মেল বন্ধন ছিল এই আশ্রম। সঙ্ঘ গুরু মতিলাল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল তাঁর। কবিগুরুর জন্মদিনে ইটিভি ভারতের কাছে স্মৃতিচারণে ডুবেছেন হুগলির মানুষজন।

সূর্য মোদকের উত্তরসূরি ভাগ্যশ্রী মোদক বলেন, "পূর্বপুরুষ ও লোক শ্রুতি রয়েছে চন্দননগর স্টান্ডে জাহ্নবী নিবাসে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তখন এই মিষ্টান্ন প্ৰতিষ্ঠানের সন্দেশ খান ৷ তখনও মতিচুরের নামকরণ হয়নি। এই মতিচুর সন্দেশ হাতে নিলেই একেবারেই গুড়ো হয়ে যায়। যা দেখলে মনে হয় একটি মুক্তকে গুঁড়ো করা হয়েছে বা চূর্ণ হয়ে গিয়েছে। 1937 সাল ফের আসেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি এই সন্দেশের নাম দেন মতিচুর। সেই থেকেই নামকরণ হয়েছে।" কবিগুরু হুগলিতে এলেই এই মতিচুর সন্দেশ খেতেন ৷ আজও এই মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বহন করে চলেছে ৷

আরও পড়ুন: রবীন্দ্রজয়ন্তীতে মাতোয়ারা বর্ধমান, কচিকাঁচাদের ভিড়ে রঙিন কার্জন গেট

চুঁচুড়ার ইতিহাসবিদ সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পঁচিশে বৈশাখ দিনটি বাংলার মানুষের কাছে অন্য মাত্রা পায়। রবীন্দ্র স্মৃতিবাহিত জায়গা গুলিতে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালিত হয়। রবীন্দ্রনাথ বা দেবেন্দ্রনাথের স্মৃতিতে এই বাড়ির কথা উল্লেখ রয়েছে। 1886 সালে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে মাগো উৎসব পালন করছেন রবীন্দ্রনাথ। তার পিতা তখন চুঁচুড়ার দত্ত বিলায়। কীভাবে পালিত হয়েছে সেই উৎসব, সেটা জানতেই রবীন্দ্রনাথকে ডেকে পাঠান তাঁর বাবা। সেখানে দেবেন্দ্রনাথ শ্রোতা এবং রবীন্দ্রনাথ তাঁকে একের পর এক গান শুনিয়েছেন। তার মধ্যে একটি গান 'নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছে নয়নে নয়নে...' ৷ এই গান সমাপ্ত হলে দেবেন্দ্রনাথ পাঁচশত টাকা উপহারস্বরূপ রবীন্দ্রনাথকে দিয়েছিলেন। যা বাঙালির মনের মণিকোঠায় নোবেল পাওয়ার থেকেও বড় পাওনা। এমনই বহু ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে চুঁচুড়ার দত্ত ভিলা।"

প্রবর্তক আপনালয়ের সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 1926 সালে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে রবীন্দ্রনাথ এসেছিলেন প্রবর্তক আশ্রমে। পরবর্তীকালে 1927-35 সাল পর্যন্ত মতিলাল রায়ের কাছে আসতেন। স্বদেশী মেলা ও অক্ষয় তৃতীয়ার জন্যও তিনি এসেছিলেন। এখানে আশ্রমের জীবনযাপন ও আত্ম উন্নতির পথে সন্ন্যাসীরা নিজেদের কীভাবে উৎসর্গ করেছেন তা জানতেই এখানে বারবার আসতেন রবি ঠাকুর ৷

Last Updated : May 9, 2023, 10:15 PM IST

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details