চন্দননগর, 20 নভেম্বর:পুরাকাল থেকেই শিশুকন্যাকে পুজো করা হচ্ছে হিন্দু ধর্মে । সেই রীতি মেনেই দুর্গাপুজো থেকে জগদ্ধাত্রী পুজোয় কুমারী পুজোর প্ৰচলন আছে । চন্দননগরে সোমবার অষ্টমীর পুজো হয় । আর এইদিন পালপাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি প্রথা মেনে করল কুমারী পুজো ।আশি বছর ধরে এই নিয়ম মেনে আসছে তারা ।
সমস্ত নিয়ম নিষ্ঠা মেনে এ বছর কুমারী হিসাবে এক বালিকার পুজো করা হয় । ওই কন্যাকে দেবী রূপে সাজিয়ে চলে পুজো, আরতি ও নানা উপাচার ৷ কুমারী পুজো দেখতে ভিড় করেন বহু মহিলা । তাঁরাও পুজো দেন কুমারীকে । পুজোর পর মিষ্টি খাইয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেন সকলেই ।
এখানে এ বার কুমারী হিসেবে পুজো করা হয় প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ইন্দালি রায়কে । তাঁকে জগদ্ধাত্রীর প্রতিমার সামনে বসিয়ে দেবী রূপে সবাই পুজো করায় সে যারপরনাই আপ্লুত। ছোট্ট কন্যার কথায়, "এ রকম অভিজ্ঞতা আমার কোনদিনও হয়নি । আমি প্রথম কুমারী হয়েছি । আজকের দিনে আমি মা হয়েছি । আমাকে প্রণাম করেছে সবাই ৷ আমি সকলকে ভালো থাকার আশীর্বাদ করছি ৷"
পালপাড়ার জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির পুরোহিত সুশান্ত ঘোষাল বলেন, "কুমারী পুজো করার অর্থ হচ্ছে, আমরা যে জগদ্ধাত্রী মৃন্ময়ী মূর্তিকে পুজো করছি, তাঁর মধ্যে মন্ত্রের মাধ্যমে প্রাণসঞ্চার করছি । কিন্তু চিন্ময়ীকে পুজো করলে তার মধ্যে পরমাত্মার প্রাণ সঞ্চার করা আছে, সেই শক্তিটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি । সেই জন্যই কুমারী পুজো করা । পুরাকাল থেকে সেই ভাবেই পুজো হয়ে আসছে । কুমারী পুজোর নিয়ম হয়, যতক্ষণ না শিশুকন্যা ঋতুমতী হচ্ছে, তার আগে পর্যন্ত তাকে পুজো করা যেতে পারে । এক থেকে 16 বছর পর্যন্ত কন্যাকে কুমারী হিসেবে পুজো করা হয় । মাতৃরূপে আমরা নারীকেই পুজো করি । মাকে আরাধনা করছি সেই কন্যা রূপেই ৷"
আরও পড়ুন:
- 'আমি নারী, আমিও পারি;' বাবার গড়া জগদ্ধাত্রী প্রতিমায় চক্ষুদান কিশোরী মেয়ের
- জগদ্ধাত্রী পুজো প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে ঝড়-বৃষ্টির ভ্রুকুটি, দুশ্চিন্তায় চন্দননগরের উদ্যোক্তারা