আমন চাষে ড্রোনের ব্যবহার হুগলিতে পাণ্ডুয়া, 5 অক্টোবর: ধান চাষে মিলবে সুবিধা ৷ সঙ্গে পাওয়া যাবে সাপের ছোবল থেকে রেহাই ৷ কীটনাশক ছড়াতেও সময়ও লাগবে কম ৷ আমন ধান চাষে এবার ড্রোনের ব্যবহারে উদ্যোগী হল হুগলির কৃষকদের সহায়ক সংস্থাগুলি ৷ কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পে বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের সহায়ক সংস্থাগুলি তৈরি করা হচ্ছে । কৃষকদের উন্নতি সাধনই এর একমাত্র লক্ষ্য । হুগলি জেলা জুড়ে এক লক্ষের অধিক হেক্টর জমি জুড়ে আমন চাষ হয়েছে এই বছর । বর্ষায় আমন ধানের ওষুধ দিতে সমস্যায় পড়েন কৃষকরা । ধান গাছগুলি বড় হয়ে যাওয়ায় জমিতে যেতে ভয় পান কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা । চাষ করতে গিয়ে সাপের ছোবল খেতে হয় অনেকে । এই সমস্যা সমাধানের জন্যই চাষের কাজে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে চাইছে কৃষকরা । ড্রোন ব্যবহারের ফলে মিলবে ওইসব সমস্যা থেকে সমাধান ৷
এছাড়াও শ্রমিক সমস্যা থেকে কীটনাশকের খরচও কম পড়বে । কম সময়ের মধ্যে অনেকটাই লাভবান হবে কৃষকরা । পঞ্জাব, হরিয়ানায়-সহ অন্যান্য রাজ্যে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয় ড্রোনকে । যদিও কৃষকরা তথাকথিত পদ্ধতি ছেড়ে উন্নত প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করলে আখেরে লাভবান হবে তারাই । সেই মতো পাণ্ডুয়ার বেশ কিছু কৃষকদের সংস্থা এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । তারা বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে ড্রোন চালানো শেখানো ও কীটনাশক দেওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে । ড্রোন কেনার ব্যাপারে সাহায্যও করবে এই সংস্থাগুলি । সরকারি তরফে এ বছর অনুদানের মাধ্যমে ড্রোন কেনার সুযোগ করে দেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন:কৃষিকাজের সুবির্ধাথে ড্রোনের ব্যবহার, আট মিনিটে এক একর জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ
হুগলি জেলায় প্রায় 1 লক্ষ 80 হাজার 680 হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয় । আর ধান গাছ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কীটনাশক দিতে সমস্যা হয় কৃষকদের । পাশাপাশি বর্তমানে কৃষি শ্রমিকের অভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের । সেই কারণে কেন্দ্র সরকার অনুমোদিত পাণ্ডুয়া কৃষি এগ্রো প্রডিউসার কোম্পানি লিমিডেটের মতো সংস্থা চাষিদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে । ইতিমধ্যেই এই ধরনের এইপিওগুলি বেশি কিছু ড্রোন অর্ডার দিয়েছে । সরকারিভাবে একটি কৃষি ড্রোনের দাম 9 লক্ষ টাকা । তবে ড্রোন কিনতে সরকারি অনুদান মিলবে 3 লক্ষ টাকা । বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিগতভাবে ড্রোন কিনলে ভাড়া দেওয়া যাবে । এক একর জমি স্প্রে করতে তিনশো থেকে চারশো টাকা পড়বে । তাছাড়া ড্রোনের মাধ্যমে একবার কীটনাশক দিতে পুরানো পদ্ধতির চেয়ে অর্ধেক খরচ হয় ।
হুগলি জেলার কৃষি উপঅধিকর্তা প্রিয়লাল মৃধা বলেন, "এ বছর কৃষকদের সুবিধার জন্য ভর্তুকি ড্রোন দেবে সরকার । আমরাও চাই কৃষকরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করুক । এতে সবরকম সুবিধা হবে ।" কেন্দ্র সরকার অনুমোদিত পাণ্ডুয়া কৃষি বিপ্লব এগ্রো প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেডের ডাইরেক্টর আবদুল নাসিম মণ্ডল বলেন," ধান গাছ বড় হয়ে যায় । মাঠে কেউটে, গোখরো ও বোরা সাপের জন্য শ্রমিকরা কাজ করতে চায় না । সাধারণত হ্যান্ড মেশিনে পাঁচ কাটা জমিতে 15 লিটার কীটনাশক ও জল লাগে । কিন্তু ড্রোনে 5 লিটারে এক বিঘা জমিতে স্প্রে করা যায় । এছাড়াও সরকারি তরফে ড্রোনের জন্য ভর্তুকি ও লোন দেওয়া হচ্ছে । এতে চাষিদের সুবিধা হবে ।"
আরও পড়ুন:তিন ইঞ্জিনিয়রের নতুন প্রযুক্তি, রাজ্যে কম দামে মিলবে কিষান ড্রোন
চাষি স্বপন ঘোষ বলেন, "এতে কৃষি শ্রমিকের খরচ কম হবে ও কীটনাশকের পরিমান কম লাগবে । এই ড্রোন ঠিক মতো পেলে আমাদের অবশ্যই সুবিধা হবে । আরও চাষের ক্ষেত্রেও অনেকটাই কার্যকরী হবে । শুধুমাত্র ধান কেন আলু চাষের ক্ষেত্রেও বহু কৃষক উপকৃত হবে ড্রোনের মাধ্যমে ।"