কোন্নগর, 26 জুলাই : শাসকদলের বহিরাগতরা কোন্নগরের এক কাউন্সিলরের উসকানিতে হামলা চালিয়েছে ৷ অভিযোগ করেছিলেন হীরালাল কলেজের নিগৃহীত অধ্যাপক সুব্রত চ্যাটার্জি ৷ সুব্রতবাবুর অভিযোগ যে ভুল নয় তা কলেজের CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর গতকাল পরিষ্কার হয়ে যায় ৷ ফুটেজে ঘটনার দিন কলেজ চত্বরে সবুজ জামা পরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর তন্ময় দেবকে ৷ ঘটনার পর অবশ্য জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব শোকজ় করেছেন তন্ময়বাবুকে ৷
সুব্রতবাবু জানান, চলতি মাসের 24 তারিখ হীরালাল কলেজে MA কোর্সের চতুর্থ সেমিস্টারের শেষদিনের পরীক্ষা ছিল ৷ পরীক্ষার পর ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসরুমে বসে গল্প করছিল, সেলফি তুলছিল ৷ তখন ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ছাত্রী সেখানে আসে ৷ জানতে চায় তারা ক্লাসরুমে কী করছে ? এই নিয়ে প্রাথমিকভাবে উভয়পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে ৷ ইউনিয়নের ছাত্রীরা MA-এর ছাত্রীদের উপর চড়াও হয় ৷ সেই সময় কয়েকজন MA-এর ছাত্রী এসে তাঁকে বিষয়টি জানায় ৷ ইতিমধ্যেই ইউনিয়নের ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজের গেটে তালা লাগিয়ে দেয় ৷ MA-এর ছাত্রছাত্রীদের বের হতে দেবে না ৷ সুব্রতবাবু আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন ৷ অভিযোগ, এরপর কয়েকজন TMCP সদস্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ বলার জন্য MA-র ছাত্রীদের চাপ দেয় ৷ MA-র ছাত্রীরা এর বিরোধ করে ৷ বলে ,"আমরা এটা বলব না "৷ তারপরই এক MA-র ছাত্রীকে ইউনিয়নের এক ডিগ্রি কোর্সের ছাত্রী চড় মারে ৷ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে অন্য অধ্যাপকদের সঙ্গে নিয়ে প্রিন্সিপালের ঘরে যান সুব্রতবাবু ৷ সেখানে MA-র ছাত্রী ও ইউনিয়নের ছাত্রছাত্রীদের ডেকে পাঠানো হয় ৷ উভয়পক্ষই ক্ষমা চেয়ে নেয় ৷ বিষয়টি মিটেও যায় ৷ কলেজের গেটও খুলে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন : কোন্নগর কলেজে অধ্যাপককে মারধর, অভিযুক্ত TMCP
এরপর সবাই যখন বেরোতে যাবে তখন কোন্নগরের এক কাউন্সিলরকে ছাত্র সংসদে বসে ছাত্রদের উসকানি দিতে দেখা যায় ৷ নাম না করেই এই অভিযোগ করেন সুব্রতবাবু ৷ তিনি বলেন, "ওই কাউন্সিলর এর আগে অধ্যাপক পুলক চক্রবর্তীকে মারতে গেছেন ৷ বহু কাণ্ড ঘটিয়েছেন ৷ কিন্তু আমরা কোনও কিছু করতে পারিনি কারণ ছবি ছিল না ৷ কাল ছবি ছিল বলে প্রতিবাদ করতে পেরেছি ৷ ছবি না থাকলে আমি মরতাম কালকে ৷ আমার নামে FIR হত ৷ ওই মেয়েটিকে বলতে বলা হত যে তার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে ৷ আর সেজন্যই ওই ছেলেরা আমাকে গণধোলাই দিয়েছে ৷ গোটা রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা এমনই ৷" শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁর প্রশ্ন, "দু'বছর নির্বাচন না হওয়া সত্ত্বেও স্টুডেন্ড ইউনিয়ন কী ভাবে থাকতে পারে ৷ কারণ ইউনিয়নের মেয়াদ তো এক বছর ৷"
আরও পড়ুন : অধ্যাপককে ফোন মমতার, হাত ধরে ক্ষমাপ্রার্থনা তৃণমূল জেলা সভাপতির