ধনিয়াখালি, 29 অগস্ট : মাঠের মাঝখানে দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে একটি বাস । একঝলক দেখে মনে হবে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে বাসটি । কাছে গেলে পরিষ্কার হবে গোটা বিষয়টি ৷ বাসের উপরে লেখা রয়েছে - মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্র ৷ অর্থাৎ যাত্রীবাহী বাস নয়, এটি একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ৷
তবে অবিকল বাসের আদলে তৈরি ৷ সিঁড়ি দিয়ে বাসের ভেতরে গেলে চোখে পড়বে ABCD থেকে শুরু করে অ-আ-ক-খ কী না রয়েছে দেওয়াল জুড়ে ৷ রয়েছে ছবির আকারে বর্ণমালা, পশু-পাখি, বিভিন্ন মাছ, ফুল-ফল ও নানা সবজি ৷ বাসে চেপে খেলার মাধ্যমে শিশুরা চিনবে সংখ্যা, জানবে মনীষীদের ৷ কোনটা কী রং, কত ধরনের আকার রয়েছে সবটুকু প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করতে পারবে এই অঙ্গনওয়াড়ি বাসে চাপলে ৷ খেলতে খেলতে শেখার মাধ্যমে বিকাশ ঘটবে শিশুমনের ৷ শিশুর ওজন মাপার জন্য রয়েছে ওজন যন্ত্র ৷ কিন্তু হঠাৎ এই উদ্যোগ কেন ?
আরও পড়ুন :বাস নয়, বাসা
প্রশাসন জানাচ্ছে স্কুলছুট বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতেই এই অভিনব উদ্যোগ ৷ বিগত কয়েকবছর ধরে ধনিয়াখালি ব্লকের দশঘড়া-2 গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মাদপুর ঘোষপাড়ায় একটি বাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলত ৷ কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল খুবই কম ৷ মাত্র 10-15 জন ৷ তাই ছোট ছোট পড়ুয়াদের পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি কাটলে তারা যাতে স্কুলমুখী হয়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে প্রশাসন ৷ তাঁদের ধারণা এমন একটা কিছু তৈরি করতে হবে, যাতে পড়ুয়ারা নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী হয় ৷ তার ফলস্বরূপ আস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকেই মাঠের মাঝখানে বাসের আকারে তৈরি করা হয়েছে ৷
জানলা থেকে দরজা, এমনকি চাকাও হুবহু তৈরি করা হয়েছে বাসের আদলে ৷ ফলে মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রটি যেমন বাইরে থেকে মনোগ্রাহী হয়েছে, তেমনই ভিতরের দেওয়াল যেন বইয়ের পাতার মতো নানা রঙে রঙিন ৷ বাসে উঠে যেদিকেই তাকাবে সেখানেই শিখবে অনেক কিছু ৷ খেলার মধ্যে দিয়ে কচি মন একটু একটু করে জানবে নিজের পরিবেশকে ৷