হুগলি,15 এপ্রিল : অ্যাম্বুলেন্সের স্বাস্থ্য কর্মীকে একঘরে করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এমনকি পানীয় জল নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে ওই কর্মীকে। এই স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, এই কাজ করলে গ্রামে ঢোকা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। ঘটনাটি চাঁপাতা হরিদাসপুরের। বছরখানেক ধরে পাণ্ডুয়ার 102 অ্যাম্বুলেন্সের অ্যাটেনডেন্ট হিসাবে কাজ করেন হেমলতা বাছার। কাজের জন্য তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করতে হয় । স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, গ্রামে কোরোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছেন তিনি। তৃণমূলের তরফে তাঁকে কাজ করতে নিষেধ করা হয়। তা নাহলে গ্রাম ছাড়তে হবে বলে জানিয়ে দেন স্থানীয় পার্টির কর্মীরা। সেই সঙ্গে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মায়া চক্রবর্তী বাড়িতে গিয়ে গ্রামে আসতে বারণ করেন। এমনকী, সেন্টারের কল ব্যবহার করতে বারণ করা হয়।ব্যবহার করতে দেবে না বলে দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়।
অ্যাম্বুলেন্সের স্বাস্থ্যকর্মীর গ্রামে ঢোকা নিষেধ, অভিযুক্ত তৃণমূল
পাণ্ডুয়ায় 102 অ্যাম্বুলেন্সের অ্যাটেনডেন্ট হিসাবে কাজ করেন হেমলতা বাছার। কাজের জন্য তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করতে হয় । স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, গ্রামে কোরোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছেন তিনি। তৃণমূলের তরফে তাঁকে কাজ করতে নিষেধ করা হয়। তা নাহলে গ্রাম ছাড়তে হবে বলে জানিয়ে দেন স্থানীয় পার্টির কর্মীরা।
হেমলতা বারবার অনুরোধ করেও কিছু শোনেনি কেউ।বাধ্য হয়ে পাণ্ডুয়া প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি।তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও পাণ্ডুয়া সমিতির সদস্য অসিত চ্যাটার্জি বলেন, ''তৃণমূলের কর্মী হয়ে এসব কাজ করতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। পুলিশ প্রশাসনকে বলব এই কর্মী যাতে এলাকায় বাস করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে।''
হেমলতা বাছার প্রসূতি মায়ের জন্য 102 অ্যাম্বুলেন্সের স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে কাজ করেন।এতদিন ধরে কোনও রকম কোন অসুবিধা ছিল না গ্রামে।কিন্তু কোরানার জন্য স্থানীয় কিছু তৃণমূল কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা তাঁদের বাড়ি থেকে বেরোতে এবং অ্যাম্বুলেন্সে কাজে যেতে বারণ করেন। হেমলতা পাণ্ডুয়া থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সে ডিউটি করেন। সেই কারণেই বাড়িতে আসতে নিষেধ করেন তৃণমূল কর্মীরা।তাঁদের এক ঘরে করার ব্যবস্থা করছে।এই পরিপ্রেক্ষিতেই প্রশাসনকে জানিয়েছেন তিনি।এখন পর্যন্ত সমাধান কিছুই হয়নি ।
102 অ্যাম্বুলেন্সের অ্যাটেনডেন্ট হেমলতা বাছার বলেন," গ্রামের লোকের বক্তব্য, বাড়িতে আসলে বাইরে যাওয়া যাবে না।কাজে গেলে ঘরে ঢোকা যাবে না।তাঁদের সন্দেহ আমি নাকি গ্রামে কোরোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছি। পাশে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের জল আনতে যাই সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে। আজ আমাদের বাড়িতে জল নেই সেই কারণে রান্নাবান্না হয়নি। খাওয়া দাওয়া হয়নি।আমি অঞ্চল এবং BDO -কে জানিয়েছি। আমরা তিনটি ফ্যামিলি একটি কল ব্যবহার করি।সেটাও করতে দেওয়া হচ্ছে না।তাহলে গ্রামের অন্যান্য কল কি করে ব্যবহার করতে দেবে? আমাদের কালকে তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে বেশ কয়েকজন বাড়িতে বলে গিয়েছে কাজ ছাড়তে হবে । না হলে গ্রাম থেকে চলে যেতে হবে । গ্রামের লোক আমার কোনও কথা শুনছেন না। চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী সকলেই সাহায্য করার জন্য এই কাজ করে । আমিও তাই করছি । তারাই যদি এই ধরনের না কাজ করে তাহলে অসুস্থ লোকদের কে দেখবে ? "
পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও বৃত্তিমূলক সভাপতি অসিত চ্যাটার্জি বলেন," কোনও স্বাস্থ্যকর্মীকে নিজের বাড়িতে থাকতে বাধা দিতে কেউ পারেন না। যদি কেউ সংক্রমণ ছড়ান তাহলে প্রশাসনকে জানাতেই পারেন।কাউকে অধিকার দেওয়া হয়নি কেউ জল বন্ধ করে দেওয়ার। যেটা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অমানবিক কাজ।"
তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "তৃণমূল বলে কোনও কথা নেই স্বয়ং মমতা ব্যানার্জি যেখানে রাস্তায় নেমে মানুষের জন্য কাজ করছেন, তাঁর দলের কর্মী হয়ে এই স্বাস্থ্য কর্মীকে আটকাতে পারে এটা আমরা বিশ্বাস করিনা। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানাচ্ছি যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় । "