শিলিগুড়ি, 18 মে: চোপড়ার তিন নাবালিকাকে শিলিগুড়ি নিয়ে এসেছিল লাদাখের দুই মহিলা। শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে তাদের লাদাখে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার তাদের সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন পেশায় টোটো চালক খুরশেদ আলি। আর উদ্ধারের পর থেকেই খুরশেদ আলির জন্য গর্বিত এলাকাবাসী। দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে দেখা করে উদ্ধারের গল্প শুনতে রীতিমতো লাইন পড়ে যাচ্ছে খুরশেদের বাড়ির বাইরে। এদিকে, ওই দুই মহিলা সেওয়াঙ চোণ্ডো ও ইয়াসমিন মালিককে বুধবার দু'দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
অতি সাধারণ জীবন খুরশেদের। শিলিগুড়ি পৌরনিগমের 40 নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগরের বাসিন্দা। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে, বোন ও মা। আধাভাঙা ঘর। টিনের চালেরও একই অবস্থা। টোটো চালিয়েই সংসার টেনে চলেছেন খুরশেদ। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে শিলিগুড়ির অলিতে-গলিতে টোটো চালিয়ে জীবন সংগ্রাম করে চলেছেন তিনি। মঙ্গলবারও আর পাঁচটা দিনের মতোই ভাড়ার জন্য বিধান মার্কেটে অপেক্ষা করছিলেন। ভাড়ার জন্য ঘুরতে ঘুরতে হংকং মার্কেটের সামনে পৌঁছলে তিন নাবালিকা শিশু-সহ ওই দুই অভিযুক্ত মহিলা খুরশেদেরর টোটোতে চাপে।
তারা বর্ধমান রোডের একটি হোটেলে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু টোটোতে চাপার পর থেকেই ওই তিন নাবালিকা ক্রমাগত কেঁদেই চলছিল। আর তাতেই সন্দেহ দানা বাঁধে খুরশেদের মনে। এরপরই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন খুরশেদ। এই ধরনের পরিস্থিতি কোনওদিন সম্মুখীন না-হওয়ায় কিছুটা আতঙ্কেও ছিলেন তিনি। তবে তা কাটিয়ে মহিলাদার জিজ্ঞেস করেন 'ইয়ে বাচ্চিলোগো ইতনা কিউ রোরেহি হ্যায়?' অর্থাৎ 'এই বাচ্চারা এত কাঁদছে কেন?' কিন্তু উত্তর আসে 'আপকো ক্যায়া। ভাড়া ঠিকঠাক মিল যায়েগা' অর্থাৎ 'আপনার কী, ভাড়া ঠিকঠাক পেয়ে যাবে'৷