পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

দুই সন্তান বিশেষভাবে সক্ষম, সাহায্যের আর্জি অথর্ব বৃদ্ধার

সংসারে তিন জনই বলতে গেলে চলচ্ছক্তিহীন । সরকারের কাছে বৃদ্ধার আর্জি, যদি কোনও আর্থিক সাহায্য মেলে বা প্রশান্তর জন্য কোনও ভাতা বরাদ্দ করা হয়, তাহলে বেঁচে যায় পরিবারটি ।

By

Published : Oct 26, 2019, 1:25 PM IST

Updated : Oct 26, 2019, 1:34 PM IST

দক্ষিণ দিনাজপুর

গঙ্গারামপুর, 26 অক্টোবর : ছোটোবেলায় সবটা স্বাভাবিকই ছিল । হেঁটেচলে এদিক সেদিক ঘুরত ছোট্ট প্রশান্ত । বয়স তিন হতেই নিজে হাতে খাওয়াও শিখেছিল । কিন্তু পরবর্তীতে কী হতে চলেছে তা কোনওভাবেই বুঝতে পারেনি পরিবারের লোকজন । চার বছর বয়সে হঠাৎ জ্বরে বেঁকে যায় শরীর । পা বেঁকে সরু হয়ে, হাত বেঁকে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে আর উঠতেই পারত না । জানা যায় পোলিওতে আক্রান্ত সে । নিজে হাতে খাওয়া তো দূর, কোনও কাজই এখন আর একা করতে পারেন না প্রশান্ত । বাবা অশ্বিনী সরকারের মৃত্যুর পর আয়ের রাস্তা একেবার বন্ধ সংসারে । গীতারানি সরকারের বয়স পঁচাত্তর ৷ তাঁর অপর সন্তানও মূক-বধির হওয়ায় অর্থাভাবে ধুঁকছে পরিবারটি । এখন সরকারের কাছে বৃদ্ধার আর্জি, যদি কোনও আর্থিক সাহায্য মেলে বা প্রশান্তর জন্য কোনও ভাতা বরাদ্দ করা হয়, তাহলে বেঁচে যায় পরিবারটি ।

সংসারে তিন জনই বলতে গেলে চলচ্ছক্তিহীন । আর্থিক অনটনে সংসারে সমস্যা রয়েইছে । পরিবারের দাবি, 22-23 বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে, বিভিন্ন বিভাগে ঘুরেও মেলেনি আর্থিক সাহায্য । মিলেছে শুধুই প্রতিশ্রুতি । সরকার বদল হলেও চিত্রটা একই থেকে গেছে বলে অভিযোগ পরিবারের । তিন বছর ধরে তাই আশায় দিন কাটছে প্রশান্তর । তিনি বলেন,''সরকারি কার্ড থাকলেও পুরোপুরি সাহায্য মেলে না । মাত্র 70 শতাংশই বরাদ্দ থাকে ।'' কিন্তু তাঁর মত, "আমি তো নিজের একটা কাজও করতে পারি না । খেতেও পারি না । মুখ বেঁকে গেছে কথা বলতে পারি না । হাঁটাচলা তো ছেড়েই দিন । কীভাবে সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে না, জানি না ।" সরকারের কাছে তাঁর আর্জি, "সরকার যদি আমাকে কোনও ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে তাহলে উপকৃত হই ।"

পোলিও আক্রান্ত প্রশান্ত সরকার

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের বোয়ালদহ এলাকা । গৃহকর্তা অশ্বিনী সরকারের মৃত্যু হওয়ায় দুই প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে গীতারানি সরকার কোনওমতে বেচে আছেন । এত বছর ধরে চিকিৎসা হয়েছে প্রশান্তর । কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর আর চিকিৎসা সম্ভব নয় । চিকিৎসায় সারা মেলেনি ছোটো ছেলেরও । তাই এই দু'জনকেই নিয়েই 30 বছর ধরে সংসার চলছে তাঁর ।

এভাবেই সারাদিন কাটে প্রশান্তর

এবিষয়ে গীতারানি সরকার বলেন, "30 বছর আগে আমার বড় ছেলের জ্বর হয়, তখন ওঁর চার বছর ৷ হাঁটা-চলায় অস্বাভাবিক লক্ষ্মণ দেখা দেওয়ায় ডাক্তার বলেন, ছেলে পোলিও রোগে আক্রান্ত । ছেলের চিকিৎসা করতে গিয়ে জীবনের শেষ সম্বলটুকু হারিয়েছি । ছোটো ছেলে জন্ম থেকে মূক ও বধির । স্বামীর কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে, বর্তমানে উপার্জনের কেউ নেই আমার পরিবারে । ছোটো ছেলে যদি সুতোর কাজ করে তবে আমাদের খাবার জোটে, নয়তো অভুক্ত হয়েই দিন কাটাতে হয় । প্রতিবেশীরা মাঝে মাঝে সাহায্য করেন । সরকারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনও লাভ হয়নি মেলেনি কোনও সাহায্য, শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র সার ।"

Last Updated : Oct 26, 2019, 1:34 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details