সাগর, 31 জুলাই : ‘‘এবার বাঙালি প্রধানমন্ত্রী চাই ৷’’ আরও স্পষ্ট করে বললে, এবার ‘দিদি’কেই প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে চাই ৷ এমন দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে তৃণমূল শিবিরে ৷ স্বয়ং মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও তাঁর দলের নেতা, কর্মীদের আবেগ ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে কই ! আশপাশে নজর ঘোরালে এ নিয়ে পোস্টারিংও চোখে পড়ছে ৷ আর এবার দলনেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করানোর দাবি নিয়ে স্বয়ং ঈশ্বরের দরজায় হাজির হলেন রাজ্যেরই এক মন্ত্রী ৷ গঙ্গাসাগরে এসে কপিল মুনির আশ্রমে পুজোও দিয়ে গেলেন তিনি ৷
আরও পড়ুন :Ajanta Biswas : মমতার উত্থানে উহ্য বামেদের পতন, বাম সত্ত্বায় কি সংযমী অনিল-কন্যা ?
বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা (Bankim Chandra Hazra) ৷ মমতা মন্ত্রিসভায় সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরে মন্ত্রিত্ব সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি ৷ সেই তাঁকেই দেখা গেল সাগরে ৷ কপিল মুনির আশ্রমে নিষ্ঠা ভরে ঈশ্বর আরাধনায় মগ্ন হলেন মন্ত্রী ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে জানালেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জন্যই পুজো দিতে এসেছেন তিনি ৷ ‘বাংলার মেয়ে’কে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে দেখাই তাঁর বাসনা ৷ মন্ত্রীর বিশ্বাস, ঈশ্বরের আশীর্বাদে তাঁর এই মনোবাঞ্ছা অবশ্যই পূরণ হবে ৷
এই প্রসঙ্গে বঙ্কিম বলেন, ‘‘একুশের বিধানসভায় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল ৷ তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা ৷ কিন্তু এবার তাঁকে দেশের প্রশাসনিক প্রধানের পদে দেখতে চায় আমজনতা ৷ একজন বাঙালিই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হোন, সেটাই চায় বাংলার মানুষ ৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করে বাংলার পাশাপাশি ভারতবর্ষকেও বিশ্বের মানচিত্রে অন্যতম সেরা স্থানে পৌঁছে দিন ৷’’
আরও পড়ুন :Tripura TMC : তেইশে ত্রিপুরা জয়ই লক্ষ্য তৃণমূলের, নজরে মহিলা-যুব ভোট
বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার এই কর্মকাণ্ড দলের অজানা নয় বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ কারণ, স্বয়ং মমতাও যে এখন দিল্লি জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছেন, সেকথা কারও অজানা নয় ৷ জাতীয়স্তরে নিজের নেতৃত্ব এবং দলের ভিত পোক্ত করতে ত্রিপুরা-সহ অন্যান্য রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটগুলির দিকেও নজর রাখছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ বহু বছর আগে একবার এক বাঙালির প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার সুযোগ হয়েছিল ৷ কিন্তু ‘ঐতিহাসিক ভুল’-এ সেই সুযোগ মাঠে মারা গিয়েছে ৷ তারপর দেশ বাঙালি রাষ্ট্রপতি পেলেও বাঙালি প্রধানমন্ত্রী আজও অধরা ৷ বাঙালির সেই সুপ্ত বাসনাকেই নতুন করে চাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন দিদি আর তাঁর দল ৷ তবে তাতে লক্ষ্যপূরণ আদৌ সম্ভব কিনা, তার উত্তর দেবে সময় ৷