ভাঙড়, 29 মার্চ : ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে মৃত মফিজুল খান বাবা শুকুর আলি খান যোগ দিলেন তৃণমূলে। গতকাল ভাঙড়ের ভোজেরহাটে তৃণমূলের একটি কর্মিসভায় দলে যোগ দেন তিনি। পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনে ছেলে মফিজুল খানের মৃত্যুর পর আন্দোলনের প্রথম সারিতে দেখা গেছিল তাঁকে। লোকসভা ভোটের মুখে সেই আন্দোলন ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এবিষয়ে অবশ্য তাঁর দাবি, "তৃণমূল আমি করতামই। মাঝে জমিরক্ষার স্বার্থে আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েছিলাম।"
ভাঙড় আন্দোলনে মৃত ছেলে, জমিরক্ষা কমিটি ছেড়ে ফের তৃণমূলে শুকুর
ছেলে মারা গেছিল আন্দোলনে, এরপরই তৃণমূল ছেড়ে জমিরক্ষা কমিটির হাত ধরেছিলেন শুকুর আলি খান। লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি ফিরে গেলেন পুরোনো দলে।
পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। সেই ঘটনায় প্রথম দিনই মফিজুল খান এবং আলমগীর মোল্লা নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের সভা থেকে শুরু করে মিটিং-মিছিলে সামনের সারিতে দেখা যেত শুকুর আলি খানকে। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মির্জা হাসান বলেন, "শুকুর আলি নিজের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে আন্দোলনে কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ ছেলে মারা যাওয়ার পর শুকুর আলি আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আট লাখ টাকা নিয়েছেন। তারপর আবার এই তৃণমূলে যোগ নিছকই টাকার জন্য।"
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর সমর্থনে গতকাল কর্মিসভাটি আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় শুকুরের তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের একাংশের মন্তব্য, ভোটের আগে তিনি চাপের মুখে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আন্দোলনে প্রভাব ফেলতে তাঁকে ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুকুর আলি, মির্জা হাসানের দাবিকে খারিজ করে বলেন, "আমি আগে থেকেই তৃণমূল করতাম। কিছুদিনের জন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে জমিরক্ষার স্বার্থে ছিলাম কিন্তু ওরা সবাই বিক্রি হয়ে গেছে তাই আমি আমার পুরোনো দলে ফিরে এসেছি।" এপ্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের ছেলে তথা পোলেরহাট 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান হাকিমুল ইসলাম জানান, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে রাজি করানো হয়েছিল। সেই আন্দোলন ধীরে ধীরে শেষ হচ্ছে। মানুষ ভুল বুঝতে পেরে একে একে তৃণমূলে যোগ দেবে।