আমফানে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ম্যানগ্রোভ, যশের আতঙ্ক সুন্দরবনজুড়ে

আমফানের তাণ্ডবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ৷ এতদিন সেই ম্যানগ্রোভ একাধিক ঘূর্ণিঝড়কে সামলেছে ৷ কিন্তু, এবার গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় যশের প্রকোপ থেকে কীভাবে বাঁচবেন সুন্দরবনের মানুষ ? সেই চিন্তাই ভাবাচ্ছে তাঁদের ৷

দক্ষিণ 24 পরগনা, 24 মে : ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের বহু ম্যানগ্রোভ । দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় একের পর এক বড় গাছ ভেঙে পড়েছিল । সরকারি তথ্য অনুযায়ী আমফানের তাণ্ডবে জেলায় সব মিলিয়ে 3 লক্ষেরও বেশি বড় গাছ ভেঙে গিয়েছে । তাই সবুজ কমতে থাকায় চিন্তিত সুন্দরবন তথা উপকূল এলাকার মানুষ । যদিও আমফানের পর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জেলাজুড়ে ব্যাপক হারে ম্যানগ্রোভ ও বড় গাছ লাগানো হয়েছিল । কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতে বড় ঝড়ের ভ্রুকুটি । এতদিন উপকূলে ধেয়ে আসা একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে সামনে থেকে লড়াই করেছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য । তার ফলেই ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে সাধারণ মানুষ ৷

কিন্তু প্রতিদিন যে হারে গাছ কাটা হচ্ছে, তার ফলে ঝড়ের আঘাত এবার সরাসরি জনবসতিতে পড়তে শুরু করেছে ৷ ফলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন উপকূলের বাসিন্দারা । নামখানার দ্বারিকনগর এলাকার বাসিন্দা বছর ষাটের শ্যামসুন্দর জানা, পেশায় প্রাইভেট টিউটর, তাঁর কথায়, ‘‘আগে দেখতাম নদীরপাড় বরাবর যতদূর চোখ যায় ততদূর গাছ । কিন্তু একের পর এক ঝড়ের তাণ্ডবে গাছের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে । অনেক সময় অসৎ মানুষজনও প্রচুর গাছ কাটছে । এলাকায় বড় গাছ কই? আমফানের সময় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল । জানি না এবার আরও কত ক্ষতি হবে’’ !

এলাকার আরেক বাসিন্দা চালক বছর ত্রিশের বাপি হাজরা পেশায় টোটোচালক । তিনিও সুন্দরবন এলাকায় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আতঙ্কিত । আরেক বাসিন্দা বিমল রং বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুরদার মুখে শুনেছি বড় গাছগুলোর জন্যই ঝড়ের সময় আমাদের বাড়িঘরগুলো রক্ষা পেয়েছে । কিন্তু, তারপর কত গাছ কাটা হয়েছে । আমফানের সময় হাড়েহাড়ে তা বুঝতে পেরেছি । ঝড়ের তাণ্ডবে আমার বাড়ি ভেঙে পড়েছিল । এবারের ঝড়ে জানি না কি হবে ।’’

পরিস্থিতির গুরুত্ব মানছেন নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহঠাকুর । তিন বললেন, ‘‘বুলবুল এবং আমফান ঘূর্ণিঝড়ের জেরে নামখানা ব্লকে প্রচুর বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছিল । কিন্তু এরপর এলাকায় প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে’’ ।