সুন্দরবন, 24 এপ্রিল : কথায় আছে 'নদীর ধারে বাস তার চিন্তা বারো মাস'। সুন্দরবন মানুষের জন্য এটাই যেন প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে । প্রতিবছর একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় আঘাত হেনেছে সুন্দরবনের উপর (Sundarbans River Erosion) । তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে সুন্দরবনবাসীর জীবন । সুন্দরবনের মানুষ উপলব্ধি করেছেন, একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় সুন্দরবনের মানুষের ঢাল হতে পারে একমাত্র ম্যানগ্রোভ । সুন্দরবনের মানুষকে জীবন-জীবিকা ধারণের জন্য অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে এই ম্যানগ্রোভ বনভূমির ।
দিনের-পর-দিন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তছনছ হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের বাদাবনে । সুন্দরবনের মানুষ দেখেছেন, আমফান থেকে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াশ । সুন্দরবনের মানুষ দেখেছেন, একের পর এক ঘূর্ণিঝড় থেকে সুন্দরবনের মানুষকে আগলে রেখেছিল এই ম্যানগ্রোভ । সেই ম্যানগ্রোভ প্রায় ধ্বংসের মুখে । আগামী দিনের কথা ভেবে ম্যানগ্রোভ ও সুন্দরবন বাঁচাতে এবার উদ্যোগী হল সুন্দরবনের মহিলারা । সারাদিন সংসারের হেঁসেল ঠেলে এক ঘণ্টা করে নিজের শিশুর মতো লালন-পালন করে বড় করে তুলেছে সুন্দরী, গরান, গেঁওয়া, নারকেল, সুপারির মতো একাধিক চারাগাছ । আর এই চারা গাছ বড় হলে নিজেরাই সপ্তাহে একটি দিন ঠিক করে নদীর চড়ে গিয়ে রোপণ করে দিচ্ছেন গ্রামের মহিলারা । গ্রামের মহিলারা জানেন, সুন্দরবনের একাধিক অঞ্চলের নদীবাঁধের অবস্থা বেহাল ।
আরও পড়ুন :নদীর ভাঙন ঠেকাতে 40 হাজার ম্যানগ্রোভ রোপণের উদ্যোগ সুন্দরবন জেলা পুলিশের
সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় রয়েছে মাটির নদীবাঁধ । সর্বগ্রাসী নদী একটু একটু করে গিলে খাচ্ছে সেইসব নদীবাঁধ । একটু ঝড়ো হাওয়াতে বাঁধ ভেঙে নোনা জলে প্লাবিত হয়ে যায় ফসল জমি । চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয় মানুষকে ৷ সুন্দরবনের মহিলারা জানেন, এই মাটির নদীবাঁধ কীভাবে ভূমিক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হয় । বিভিন্ন নদীবাঁধ থেকে এলাকায় বনসৃজনের মাধ্যমে তা রোখার চেষ্টা করছেন বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজ্য সরকার ও বনদফতর । বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় মহিলাদের নিপুণ হাতে তৈরি করা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ চারা ।