সুন্দরবন, 3 জুন:বালাসোরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় দক্ষিণ 24 পরগনার প্রত্যন্ত গ্রাম গোসাবার কর্মকার পরিবারের 4 জন পরিযায়ী শ্রমিকও ছিলেন। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার খবর এসে পৌঁছতেই পরিবারের লোক কান্নায় ভেঙে পড়েন । বারবার ফোন করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করেন।
অন্ধ্রপ্রদেশে কৃষিকাজে সাহায্য করতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে শুক্রবার সকালে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা ৷ দুর্ঘটনাগ্রস্থ ওই ট্রেনেই ছিলেন, চঞ্চলা কর্মকারের ভাই রঞ্জন কর্মকার। ছেলে সনৎ কর্মকার ও দুই বউমা শ্যামলী ও কবিতা কর্মকার। দুপুর তিনটে সময় শালিমার থেকে ট্রেনে চাপেন তাঁরা। রাত আটটা নাগাদ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় খবর আসে অন্ধপ্রদেশ যাওয়ার পথে ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তারপর থেকেই ক্রমাগত ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে থাকেন চঞ্চলারা। শুধুমাত্র ভাই রঞ্জন কর্মকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা করতে পেরেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, রঞ্জন কর্মকারের দু'টি পায়ে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। যদিও ছেলে ও দুই বউমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। কর্মকার বাড়ির লোকজন-সহ প্রতিবেশীরা টিভি পর্দার দিকেই এখন উদ্বিগ্ন অবস্থায় নজর রেখে চলেছেন ক্রমাগত।
আরও পড়ুন:ট্রেন বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে 233, ওড়িশায় রাষ্ট্রীয় শোক
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা 7টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর 3টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ওড়িশার বালাসোর বাহাঙ্গা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে 23 কামরার ট্রেনটি। তবে, করমণ্ডলের ইঞ্জিনটি যেভাবে মালগাড়ির উপর উঠে পড়েছে, তা পিছন থেকে সরাসরি ধাক্কা মারলেই সম্ভব। প্রত্যক্ষদর্শী ওই পুলিশকর্মীর বয়ানও তেমনই বলছে। তবে দুর্ঘটনার কোনও কারণই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলে এর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে হতাহতদের উদ্ধারে এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে লাইনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপর। কারণ, ওই দুর্ঘটনার ফলে হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারতগামী সমস্ত ট্রেন শুক্রবার বাতিল করতে হয়েছে।