শীতে ত্রিপলের নীচে ঠাঁই বৃদ্ধার মন্দিরবাজার, 30 ডিসেম্বর: পরিবার নিয়ে মাটির দোতলা ঘরে বসবাস করতেন বৃদ্ধা ৷ কিন্তু নভেম্বর মাসের 30 তারিখ সেই আশ্রয়টুকুও হারিয়ে যায় ৷ এলাকায় জলের পাইপ লাইনের কাজের জেরে ভেঙে পড়ে তাঁর বাড়িটি ৷ এরপর মাথার উপর সামান্য ছাউনিটাও হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে ঠাঁই হয়েছে পরিবারটির ৷ এখনও ভরসা বলতে ত্রিপলের তলায় মাথা গোজার মতো একটু জায়গা ৷ তাতেই গত একমাস ধরে শীতের দিনরাত কাটছে বৃদ্ধ স্বর্ণলতা বৈদ্য ও তাঁর পরিবারের ৷ ঘটনাটি দক্ষিণ 24 পরগনার গাববেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রামেশ্বরপুর গ্রামের ।
পরিবারের অভিযোগ, বাড়ি করে দেওয়ার জন্য কন্টাক্টরের থেকে আশ্বাস মিললেও তা এখনও পর্যন্ত হয়নি ৷ নিজেদের সমস্যার কথা স্থানীয় পঞ্চায়েতকে জানায় তারা ৷ তবে পঞ্চায়েত থেকে একটি ত্রিপল দিয়েই সার ৷ আর কোনও সাহায্য করা হয়নি । বিজেপি করে বলে পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়নি তৃণমূল পরিচালিত প্রশাসন বলেও অভিযোগ অসহায় পরিবারটির ৷
স্বর্ণলতা বৈদ্য বলেন, "জলের পাইপ লাইন কাজের সময় হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে আমাদের বাড়িটা ৷ এরপর একমাস পাড় হয়ে গেলেও এখনও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি ৷ ঠান্ডায় খুব কষ্ট করে জীবনযাপন করছি আমরা ৷ বিজেপি করি বলেই মনে হয় বাড়িটি ভেঙে দিয়েছে ৷ পঞ্চায়েত থেকেও কোনও সাহায্য করছে না ৷" বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির ৷ বিজেপি নেতা রণজিৎ হালদার বলেন, "ওই বৃদ্ধার পরিবারের লোকজন বিজেপি করে তাই ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৷ এমনকী তাঁরা প্রশাসনের কাছে থেকে কোন সাহায্য পাচ্ছে না ।"
যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে অস্বীকার করেছে শাসকদল ৷ গাববেড়িয়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সুবীর সরদারের বক্তব্য, "পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ওই বৃদ্ধাকে আপৎকালীনভাবে একটি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে ৷ তবে যেহেতু পিএইচই'র পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে ৷ ফলে এখানে আমাদের এখানে কিছুই করার নেই ৷ তবুও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করা হবে ।" এই শাসক বিরোধী টানাপোড়েনে না জড়িয়ে মাথার উপর ছাদই এখন একমাত্র কাম্য পরিবারটির ৷ তাহলে এই শীতের দিনে তাদের একটু স্বস্তি মেলে ।
আরও পড়ুন:
- মেলেনি পঞ্চায়েতের কোনও পরিষেবা, ত্রিপল ঘেরা বাড়িতে বসে অভিযোগ গ্রামবাসীদের
- কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বে আবাস যোজনার টাকা থেকে বঞ্চিত উপভোক্তারা, বছরভর কাটছে খোলা আকাশের নীচে
- সরকারি লোগো দেওয়া ত্রাণের ত্রিপল দিয়ে হোটেলের ছাউনি, খোলা হল প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে