কোচবিহার, 28 জুন : কোচবিহারে চ্যাংরাবান্ধায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ৷ এখান দিয়েই দুই দেশের মধ্যে চলে বাণিজ্য ৷ চলে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি-রপ্তানি ৷ সারাদিনে দম নেওয়ার সময় থাকে না এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লাখ মানুষের ৷ কিন্তু, কোরোনার জেরে লকডাউন শুরুর পর ছবিটা সম্পূর্ণ পালটে যায় ৷ ট্রাকের চাকা প্রায় চার মাস ঘোরেনি ৷ বন্ধ বাণিজ্য ৷ যার জেরে রুটি-রুজিতেও পড়েছে টান ৷
দীর্ঘ তিন মাস পর লকডাউন শেষ হয় দেশে ৷ আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে সব কিছু ৷ শুরু হয়েছে পরিবহন, বিভিন্ন পরিষেবা, আমদানি-রপ্তানিও ৷ রাজ্যের অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে ৷ কিন্তু এখনও লকডাউনে কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত ৷ এই সীমান্তে চালু হয়নি আমদানি-রপ্তানি ৷ চারিদিকে দাঁড়িয়ে সারি সারি ট্রাক ৷ কাজ না থাকায় রুটি-রুজিতে টান পড়েছে কয়েক লাখ মানুষের ৷ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ভিনরাজ্য থেকে আসা কয়েকশো ট্রাক ড্রাইভার ও খালাসির খাবারের টাকাটুকুও নেই ৷ কয়েক মাস ধরে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকার কারণে টায়ার নষ্ট হয়েছে ৷ চুরি হয়ে গিয়েছে ব্যাটারি ৷ ট্রাক টার্মিনালে শুয়ে বসে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা ৷ খাঁ খাঁ করছে সীমান্তের গেট ৷ কবে চালু হবে বাণিজ্য ? উত্তর নেই কারও কাছেই ৷ বাধ্য হয়ে এরপর আন্দোলন শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চ্যাংরাবান্ধা স্থল বন্দর যৌথ সংগ্রাম কমিটি ৷ জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চালুর চেষ্টা চলছে ৷
কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধায় রয়েছে রাজ্যের দ্বিতীয় স্থল বন্দর ৷ এই সীমান্ত দিয়ে 1989 সাল নাগাদ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য চালু হয় ৷ ভারত ও ভুটান থেকে মূলত বোল্ডার বাংলাদেশে যায় ৷ অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, প্লাস্টিক সামগ্রী, তুলো এদেশে আসে ৷ প্রতিদিন ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশ মিলিয়ে হাজার খানেক ট্রাক যাতায়াত করে ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় বাণিজ্য ৷ বোল্ডার বোঝাই কয়েক হাজার ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়ে স্থল বন্দরে ৷ লকডাউন উঠলে রাজ্যের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয় ৷