মুরারই, 9 এপ্রিল: "সোমবার উত্তর 24 পরগনার ঠাকুরনগরের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখোশ খুলব" ! রবিবার বিকেলে বীরভূমের মুরারই বিধানসভা এলাকার কেস্তারা গ্রামের মাঠে আয়োজিত জনসভার মঞ্চ থেকে এভাবেই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ সকলেরই প্রশ্ন, ঠাকুরনগরের সভায় কী এমন কথা বলবেন শুভেন্দু, যাতে 'মুখ্যমন্ত্রীর মুখোশ খুলে যাবে' !
এদিন মুরারইয়ে এই সভার আয়োজন করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ৷ সভায় শুভেন্দু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, হজ কমিটির সদস্যা মাফুজা খাতুন, রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল, মহিলা মোর্চার বীরভূমের সাংগঠনিক সভানেত্রী রশ্মী দে, দলের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা প্রমুখ ৷
সভার শুরুতেই বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসকে 'চোরের দল' বলে আক্রমণ করেন ৷ এরপর মুরারইয়ের স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের প্রসঙ্গে বলেন, "এঁরা মাসে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে আদায় করে পিসি-ভাইপোকে পাঠাচ্ছেন ! এই টাকা পাচারের জন্য আইপিএস শ্যাম সিংকে ডিআইজি পদে নিয়ে আসা হয়েছে ! ওই অফিসার সামনে পিছনে পুলিশ নিয়ে টাকা কলকাতায় পৌঁছে দিচ্ছে !" অর্থাৎ, ফের একবার পুলিশের সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা ৷
এদিনের সভায় শুভেন্দু গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও অসমের উদাহরণ তুলে ধরেন ৷ এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে সংখ্য়ালঘুদের আশ্বস্ত করেন ৷ তাঁর বক্তব্য, তৃণমূল বলছে, এনআরসি হলে সংখ্যালঘুদের দেশছাড়া করা হবে ৷ কিন্তু, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানান শুভেন্দু ৷ তাঁর যুক্তি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও অসমে তো বিজেপিই ক্ষমতায় আছে ৷ কিন্তু, ওই রাজ্যগুলি থেকে কি সংখ্য়ালঘুদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ? তাহলে বাংলায় কেন তা করা হবে ? পুরোটাই তৃণমূল কংগ্রেসের অপপ্রচার বলে দাবি করেন শুভেন্দু ৷ তিনি বলেন, "এসব কথা বলে সংখ্যালঘু ভাইদের আর বিজেপির থেকে দূরে সরানো যাবে না ৷ ফুরফুরা শরিফের পীরজাদাও সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন ৷"
এদিনের সভামঞ্চ থেকে ফের একবার বগটুই গণহত্যা নিয়ে রাজ্য়ের শাসকদলকে তোপ দাগেন শুভেন্দু ৷ বলেন, "রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে 10 জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে ৷ সেই স্বজনহারারা আজ আমাদের সঙ্গে ৷ আমরাই প্রথম বগটুই গ্রামে স্মরণসভা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম ৷ আমাদের দেখে ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু গ্রামবাসী তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন ৷ এর জন্য বগটুই গ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই ৷"
আরও পড়ুন:মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'চোরদের রানি' বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর
সভা শেষে বেশ কয়েকটি নাম উল্লেখ করে শুভেন্দু বলেন, "তৃণমূলের সবাই চোর ৷ এই জেলার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ করিম খান, বিধায়ক রানা সিংহও সেই তালিকায় রয়েছেন ৷ অনেক নেতা, মন্ত্রী লাইনে আছেন ৷ তবে ধেড়ে ইঁদুরদের আমরা দেখব ৷"