শান্তিনিকেতন, 6 জুন : বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ানোয় প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। মেলা কি আদৌও হবে? এই নিয়ে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়ে গেছে পড়ুয়া, আশ্রমিক থেকে শুরু করে বোলপুরবাসী, ব্যবসায়ীদের মধ্যে। 175 বছর পেরিয়ে আজ অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা ।
1843 সালের 21 ডিসেম্বর (7 পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। এরপরেই ব্রহ্মধর্মের প্রসার ও প্রচার বৃদ্ধি পায়। দীক্ষিত হওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও ব্রহ্মধর্মের প্রসারের স্বার্থে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 1845 সালে কলকাতার গোরিটির বাগানে উপাসনা, ব্রহ্ম মন্ত্রপাঠের করেন। এটিই পৌষমেলার সূচনা বলে ধরা হয়। পরবর্তীকালে 1862 সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে শুরু করেন। 1891 সাল (7 পৌষ) ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠা হয়। এটিকে শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসব সূচনার সময় হিসাবে ধরা হয়। 1894 সালে এই পৌষ উৎসবের পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা।
এই বিষয়ে, বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডঃ অভ্র বসু বলেন, "1888 সালের 8 মার্চ মহর্ষি ন্যাস বা ট্রাস্ট ডিডে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষমেলা সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করে যান যে, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট প্রতি বছর একটি মেলা বসাবে। এই মেলা সকল ধর্মের মানুষের মিলন ক্ষেত্র হবে । কোনওপ্রকার মূর্তি পুজো হবে না । কুৎসিত আমোদ উল্লাস হবে না । মদ, মাংস বর্জিত এই মেলায় সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য কেনা-বেচা হবে। আরও বলা হয়, যদি এই মেলা থেকে কোনও প্রকার আয় হয় সেই টাকা আশ্রমের উন্নতি কল্পে ব্যয় করা হবে।