শান্তিনিকেতন, 5 জুন : শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা প্রায় বন্ধের মুখে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনার ভার আর বহন করতে পারবে না । গতকাল দীর্ঘ আলোচনার পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একথা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় পরিবেশ আদালত ও সংশ্লিষ্ট নানা মহলের নিয়মাবলী মেনে এই বৃহৎ মেলা পরিচালনা করা বিশ্বভারতীর পক্ষে সম্ভব নয়।
গতকাল বিকেলে বিশ্বভারতীর লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মী, আধিকারিক, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে স্থির হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আর পৌষমেলা পরিচালনার ভার বহন করবে না। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী ঐতিহ্যপূর্ণ কৃত্যাদি, উপাসনা, আশ্রমিকদের স্মরণ, মহর্ষি স্মারক বক্তৃতা, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, সমাবর্তন, খ্রিস্ট উৎসব যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এই পৌষমেলা পরিচালনা করে থাকে। পৌষ মেলায় অত্যাধিক দূষণ হচ্ছে। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই মর্মে পরিবেশ আদালতে একটি মামলা করেছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালত পৌষমেলায় একাধিক দূষণ বিধি বেঁধে দেন। কিন্তু, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় পৌষমেলায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যথাযথ দূষণ বিধি মানতে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৈঠকের পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় পৌষমেলা পরিচালনার ভার কর্তৃপক্ষ আর বহন করবে না।
বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তে প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। যদিও, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট চাইলে প্রশাসনিক সহযোগিতায় পৌষমেলা পরিচালনা করতে পারে। কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের লোকবল কম থাকায় এবারের পৌষমেলা পরিচালনা করা কতটা সম্ভব হবে? মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় থেকে চলে আসছে এই পৌষমেলা। যতদিন গেছে বেড়েছে মেলার পরিসর। এবার মেলা নিয়ে এই অনিশ্চয়তা ইতিমধ্যেই বিরাট প্রভাব ফেলেছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে আশ্রমিক, বোলপুরবাসীর মধ্যে।