ভদ্রপুর, 13 নভেম্বর : বীরভূমের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম কালী মন্দির ভদ্রপুর গ্রামের পশ্চিমে আকালীপুর গ্রামের গুহ্যকালী মন্দির । আনুমানিক 1775 সালে মায়ের এই মূর্তিকে তন্ত্র সম্মতভাবে বেদীমূলে স্থাপন করেন মহারাজ নন্দকুমার । মন্দিরে মা কালীকে দেখা যায় পা মুড়িয়ে বসে থাকা অবস্থায় । মন্দিরের গর্ভগৃহে পঞ্চমুণ্ডির আসনের উপর সর্পের বেদীতে দেবী পা মুড়িয়ে বসে আছেন । কষ্টি পাথরের তৈরি দেবী মূর্তি ।
এই মূর্তি নিয়ে বহুমত আছে । অনেকের মতে এর ইতিহাসের শুরু মগধরাজ জরাসন্ধের সময় থেকে । আসলে গুহ্য কথার অর্থ যা গোপনে রয় । এই মাতৃমূর্তিও তাই গৃহীদের কাছে অপ্রকাশ্য, একমাত্র সাধকদেরই আরাধ্যা দেবী তিনি । সচরাচর কালীমূর্তি যেমন হয় গুহ্যকালী মূর্তি সে রকম নয় ।
245 বছরের পুরানো আকালীপুরের গুহ্যকালী আবার কথিত আছে, ওয়ারেন হেস্টিংসের নজরে পড়ে যায় মায়ের এই অপরূপ মূর্তি । মায়ের অপরূপ মূর্তি দেখে তাঁর লোভ হয় । আর তিনি মায়ের এই মূর্তিটিকে ইংল্যান্ডের মিউজ়িয়ামে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন । এবং মূর্তিটি চুরি করে লন্ডনের উদ্দেশে নদী পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল । মূর্তি চুরি গিয়েছে খবর পেয়ে মহারাজ নন্দ কুমার জলদস্যুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে মায়ের মূর্তিটি উদ্ধার করে, নদীপথে তারকা ব্রাহ্মণী নদী পার করে চলে আসেন আকালীপুরে । এখানে এসে ব্রাহ্মণী নদী তীরে শ্মশানের পাশে নিরিবিলি মাঠে রেখে মন্দির র্নিমাণের কাজ আরম্ভ করেন । এই মন্দির গর্ভটি দেখতে অনেকটা দুর্গের মত । সেখানেই মাকে প্রতিষ্ঠা করেন ।
পরবর্তীকালে ওয়ারেন হেস্টিংস মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করেন নন্দকুমারকে ও বিচারে তাঁর ফাঁসি হয় । সেই সময় থেকে শুরু করে আজও নন্দকুমারের বংশধররা মায়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে বহাল রয়েছেন ।