বাঁকুড়া, 16 সেপ্টেম্বর: ম্যাটিনিতে হাউসফুল থেকে ইভিনিং সাসপেন্স, চা থেকে শুরু করে সিঙাড়া ব্যবসায়ীদের কলরব, আর শোনা যায় না । এইসব হল্লাহাটির ইতিহাস সবটাই এখন অতীত বাঁকুড়া শহরে ৷ ঐতিহ্যবাহী 'সিনেমা রোড' হারিয়েছে তার ছন্দ । প্রযুক্তির উন্নতির এই স্তরে দাঁড়িয়েও বাঁকুড়া সদর শহর হয়ে পড়েছে সিনেমা হল শূন্য । সেই জায়গায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে প্রত্যন্ত বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল ফুলকুসমা গ্রাম ।
এখানে রয়েছে গন্ধেশ্বরী প্রেক্ষাগৃহে ৷ যেখানে ভিড় জমাচ্ছে দূর দূরান্ত থেকে আসা সিনেমাপ্রেমী মানুষজনেরা ৷ আট থেকে আশির আনাগোনা বাড়ায় আধুনিক সরঞ্জামে সেজে উঠেছে ফুলকুসমার 'গন্ধেশ্বরী' প্রেক্ষাগৃহ ৷ এই প্রেক্ষাগৃহের যাত্রা শুরু হয়েছিল 1981 সালে ৷ তারপর থেকে একদিনের জন্য বন্ধ হয়নি সিনেমা হলটি । কিছুদিন আগেই 'গদার 2' সিনেমা চলায় এই প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের আনাগোনা ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল । সদ্য শাহরুখ খান অভিনীত 'জওয়ান' সিনেমাও চলছে রমরমিয়ে । শাল,সেগুন,পলাশে ঢাকা বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল ফুলকুসমার মানুষ তো বটেই, এর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জেলা ঝাড়গ্রাম থেকেও মানুষও ছুটে আসছে এখানে সিনেমাকে উপভোগ করতে ।
ঝাড়গ্রাম থেকে আসা সিনেমাপ্রেমী প্রদীপ পাত্র জানান, বাঁকুড়া শহর তো বটেই তাদের জেলা ঝাড়গ্রামেও নেই একটিও সিনেমা হল ৷ তাই ঝাড়গ্রাম থেকে ফুলকুসমার দূরত্ব বেশি না হওয়ায় এখানেই তাঁরা এসেছেন সিনেমাকে উপভোগ করতে । একটা সময় যে জঙ্গলমহল মানেই ছিল মুখ আর মুখোশের খেলা, গভীর অরণ্যে নিয়ে গিয়ে রক্তচক্ষু দেখানোর পালা । সেই জঙ্গলমহল এখন হয়ে উঠেছে সিনেমাপ্রেমীদের মুক্তাঞ্চল । জঙ্গলমহলের থেকেই বোধহয় শিক্ষা নেওয়া উচিত বাঁকুড়া শহরের । যেখানে শহরের মানুষকে এক চিলতে সিনেমা উপভোগ করতে ছুটে যেতে হচ্ছে দূরের কোন শহরে । সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে জঙ্গলেমহলের মানুষ ডিজিটাল অত্যাধুনিক পর্দায় সিনেমা উপভোগ করছে তাদের এলাকাতেই ।