পাত্রসায়র, 15 জুন : বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের গোস্বামী গ্রামের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে শালী নদী ৷ যে নদীর পারাপারের জন্য কোনও পাকা সেতু নেই ৷ নদীর উপরে বাঁশের তৈরি সেতুই একমাত্র ভরসা পাত্রসায়রের পঁচিশটি গ্রামের বাসিন্দাদের ৷ তিন দশকের বেশি সময়ে বাম আমল তো দূর, তৃণমূল সরকারও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ৷ প্রশাসনের কাছে পাকা সেতুর আর্জি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের ৷ প্রায় 35 বছর ধরেই গ্রামবাসীরা এই সেতু দিয়ে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করছেন ৷
তিন দশকের এই পুরনো বাঁশের সেতু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও গ্রামবাসীদের করতে হয়েছে ৷ নিজেরাই একজনকে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োগ করেছেন ৷ তার খরচ বহন করতে বাঁশের সেতুর উপর দিয়ে সাইকেল ও বাইক পারাপারের জন্য 2 টাকা এবং 5 টাকা করে নেওয়া হয় ৷ তবে, সেক্ষেত্রেও সাইকেল ও বাইক নিয়ে হেঁটে যেতে হয় আরোহীদের ৷ কেউ যদি সাইকেল বা বাইক চালিয়ে যাতায়াত করেন, সেক্ষেত্রে তাঁদের যথাক্রমে 50 টাকা এবং 100 টাকা ধার্য করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : নাগর নদীর উপর সেতু গড়ে না ওঠায় ঝুঁকির যাত্রা দুই রাজ্যের বাসিন্দাদের
প্রশ্ন উঠছে, কেন গ্রামবাসীদের একাধিকবার আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও ফল হচ্ছে না ৷ এ নিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অজিত ঘোষ নামে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি 3 বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন ৷ কিন্তু, কয়েকবছর আগে প্রশাসনের তরফে পাকা সেতু তৈরির জন্য সামগ্রী এসেছিল ৷ কিন্তু, তার কয়েকদিনের মধ্যেই কন্ট্রাক্টর এসে সেতুর তৈরির সামগ্রী তুলে নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ ৷ এ নিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অজিত ঘোষ জানিয়েছেন, কন্ট্রাক্টর জানিয়েছিলেন ওই সব সামগ্রী বর্ধমানে কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজে ব্যবহার হবে ৷
25টি গ্রামের ভরসা একটি মাত্র বাঁশের সেতু, পাত্রসায়রে অসহায় দিনযাপন বাসিন্দাদের আরও পড়ুন : জলের তোড়ে ভেসে গেল অজয়ের অস্থায়ী সেতু
ফলে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বাঁশের সেতুর উপর দিয়ে বাধ্য হয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে শালখারা, মামুদপুর, বৈকুণ্ঠপুর, বীজপুর সহ মোট 25টি গ্রামের বাসিন্দারা ৷ এ নিয়ে এক গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন, প্রতি বর্ষায় শালী নদীর উপর তৈরি এই বাঁশের সেতু ভেঙে যায় ৷ সেই সময় যাঁদের উপায় থাকে তাঁরা ঘুরপথে শহরে কাজের জন্য যান ৷ আর তা না হলে কাজ হারিয়ে ঘরে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না ৷ এভাবেই দিনের পর দিন বাধ্য হয়েই বাঁশের সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে 25টি গ্রামের বাসিন্দাদের ৷