বিষ্ণুপুর, ৭ মার্চ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাঁকুড়ায় তৈরি হয়েছিল একটি এয়ারবেস। এখন সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে। সেটিকেই নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা নিল ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার পিয়ারডোবায় অবস্থিত এয়ারবেসটিকে সাজানোর জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে বায়ুসেনা।
বিষ্ণুপুর শহর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার। সেখানে বাসুদেবপুর তথা পিয়ারডোবাতে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত এয়ারবেসের রানওয়ে। চারিদিক জঙ্গলে ঘেরা। তৈরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটারেরও বেশি।
১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এয়ারবেসটি সক্রিয় ছিল। জানা যায়, মিত্রশক্তির তৈরি এই এয়ারবেস ব্যবহার করা হত B29 বোমারু বিমানের জন্য। সেই সময় মিত্রশক্তির পক্ষে অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভারতবর্ষে যে চারটি বেস বানিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল পিয়ারডোবার এই এয়ারবেসটি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালে এই বেসটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পিয়ারডোবার এয়ারবেসটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চারিদিক ঝোপঝাড়ে ভরতি। তবে বলাবাহুল্য এই চাতাল ঐতিহাসিক অনেক ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ রায় জানান, এটা নাকি একটা "এরাডুম" ছিল। যুদ্ধের সময় তাঁর বাবা রাখোহরি রায়, মা তুলসী রায় এখানে শ্রমিকের কাজ করতেন। সাহেবরা তাঁদের চাল, ডাল, গম দিতেন। তবে এখন এয়ারবেসটি স্থানীয়দের কাছে চাতাল হিসেবেই পরিচিত।
সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে এই পরিত্যক্ত এয়ারবেসটি সম্পর্কে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে খবর নেওয়া হয়। ভূমি দপ্তরকে ও জেলাশাসককে বলা হয় এয়ারবেসের জমি পরিমাপ করে তার তথ্য দিতে। বায়ুসেনার কথা মতো এলাকাটির ডিমারকেশন এবং পরিমাপ করে সমস্ত তথ্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক ডঃ এস উমাশংকর।
ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে দেশের পূর্বাঞ্চলের এই পরিত্যক্ত এয়ারবেসটি নিয়ে যে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে তা স্পষ্ট। ইতিমধ্যে বাঁকুড়ার নিকটবর্তী পানাগড় আর্মি ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে হারকিউলিস বিমান ওঠা-নামার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে। সংশ্লিষ্ট মহলের মত, চিনকে চাপে রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।