বাঁকুড়া, 11 এপ্রিল : বালুচরী ৷ নামের মধ্যেই রয়েছে আভিজাত্য ৷ প্রতিটি শাড়ি যেন কথা বলে ৷ প্রতিটি সুতোর টানে যেন নিজস্ব একটা কথন আছে ৷ কোথাও ফুটে উঠেছে টেরাকোটার কারুকাজ ৷ কোথাও মহাভারতের গল্প ৷ কোথাও আবার আদিবাসী নৃত্য ৷
বাঙালির শাড়ির সম্ভারে বছরের পর বছর ধরে স্বমহিমায় বিরাজমান বালুচরী ৷ নবাবী এই শাড়িগুলি কোনওটি তৈরি করতে সময় লাগে এক মাস ৷ কোনওটি আবার পনেরো দিন । এক একটা শাড়ির দাম 6 হাজার টাকা থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা ৷
বালুচরীর ইতিহাস বলতে, এটি শুরু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ সংলগ্ন বালুচর নামে কোনও এক এলাকায় ৷ অনেক নথি আবার বলছে, জিয়াগঞ্জেরই পূর্বনাম ছিল বালুচর ৷ সেই বালুচর নাম থেকেই এসেছে বালুচরী ৷ শিল্পীদের কাছে বালুচরীর বয়ন এক সাধনার মতো ৷ সেই সময় নবাবরা তাঁদের বেগমদের জন্য শাড়ি বানাতেন বালুচরের শিল্পীদের দিয়ে ৷
কালক্রমে গঙ্গাগর্ভে হারিয়ে যায় এই বালুচর প্রদেশ ৷ এরপর কালের নিয়মে হারিয়ে যায় বালুচরী শাড়ি ৷ মাঝে পেরিয়ে যায় অনেকটা সময় ৷ দীর্ঘদিন পর এর কিছু নকশা শুভ ঠাকুরের হাত ধরে বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত কারুকার্য শিল্পী অক্ষয়দাস পাঠরাঙার হাতে আসে ৷ তার পর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের পৃষ্টপোষকতায় বালুচরী শিল্পের নবজাগরণ ঘটে ।