আলিপুরদুয়ার, 16 এপ্রিল : নববর্ষের শুরুতেই বাড়ল টিকিটের দাম। আবার কমে গেল সাফারির সময়। গতকাল থেকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে হাতি সাফারি অথবা জিপসি ভ্রমণের জন্য প্রায় দ্বিগুণ টাকা দিতে হচ্ছে।
একইসঙ্গে দুটি সাফারির ক্ষেত্রে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ত্রিশ মিনিট সময়। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই এই নয়া নিয়ম চালু করার কথা ঘোষণা করেছে বন দপ্তর। নতুন রেট চার্ট সামনে আসতেই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সাথে জড়িত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশঙ্কা, আগের তুলনায় কম সময়ের জন্য মোটা টাকা গুনে জঙ্গল ভ্রমণে আগ্রহ হারাবেন পর্যটকরা। ফলে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জলদাপাড়াকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এলাকার অর্থনীতি। তবে বন দপ্তরের যুক্তি, সময়ের সাথে তাল মিলিয়েই বাড়ানো হয়েছে দাম। এবং পর্ষটকদের অযথা সময় নষ্টের প্রবণতা রুখতে ও বন্যপ্রাণী ও পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থেই কমানো হয়েছে সাফারির সময়। বন দপ্তরের এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুমকি দিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
216.51 বর্গকিলোমিটারে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের মূল আকর্ষণ এক শৃঙ্গী গন্ডার। এছাড়াও হাতি, লেপার্ড, বাইসন, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণসহ সেখানে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখিদের এক অটুট সাম্রাজ্য। জঙ্গলের কোর এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশ বহু দিন আগেই বন্ধ করে দেয় বন দপ্তর। এতদিন জাতীয় উদ্যানটির মূল প্রবেশদ্বার থেকে হলোং বনবাংলো হয়ে হরিণডাঙা ও জলদাপাড়া ওয়াচ-টাওয়ার পর্যন্ত যেতে পারতেন পর্যটকরা। দিনে তিনবার দুই ঘণ্টার জন্য ওই এলাকায় জিপসি সাফারি করা যেত। জিপসি প্রতি ছয় জনের জন্যে গুনতে হত 1850 টাকা। গতকাল থেকে তা বেড়ে দাঁড়ায় 2600 টাকায়। এখানেই শেষ নয়। ওই সাফারির সময় দুই ঘণ্টার পরিবর্তে দেড় ঘণ্টা করা হয়েছে। জলদাপাড়ার বর্ধিত বনাঞ্চল চিলাপাতাতেও জিপসি সাফারির জন্য একই নিয়ম লাগু করা হয়েছে গতকাল থেকে।
শুধু কার সাফারিই নয়। একই সঙ্গে হাতি সাফারির দামও বাড়ানো হয়েছে অনেকটাই। আগে চার জন পর্যটকের হাতি সাফারির জন্য 3150 টাকা গুনতে হত। নয়া রেটে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 4150 টাকায়। অথচ ডুয়ার্সের আরেক জাতীয় উদ্যান গোরুমারায় পুরোনো দামেই জঙ্গল ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা। সময়ও দু'ঘণ্টা নির্ধারিত রয়েছে। গোরুমারার পর্যটন ব্যবসায়ী সমীর দেব বলেন, "গোরুমারায় পর্যটকদের জঙ্গল ভ্রমণের সময় কমানো হয়নি। দামও বাড়েনি।"