পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

করোনাকালে দিনমজুর, চাষাবাদের কাজ করছে বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির ছাত্ররা

By

Published : Jun 12, 2021, 7:59 PM IST

অ্যাকাডেমির ছাত্র আকাশ সোরেন অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন । কিন্তু করোনার প্রকোপ তাকে শুধু বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য করেনি ৷ পরিবারের জীবন ধারণের লড়াইয়ে কাজে নামতে বাধ্য হয়েছে সে।

students of  BFA football academy now working at cultivation
students of BFA football academy now working at cultivation

কলকাতা, 12 জুন : ফুটবল অ্যাকাডেমি এখন কোভিড সেফ হোমে পরিবর্তিত হয়েছে ৷ যাদের দেখে মনে হয়েছিল আগামী দিনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মশলা রয়েছে তারা এখন অন্যের জমিতে দিনমজুরি, মাঠে ধান রোঁয়ার কাজে ব্যস্ত । এটাই বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির সামগ্রিক ইউ টার্নের ছবি ।

খড়দা এবং টিটাগড়ের মাঝে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমি । বাংলার ফুটবল প্রতিভাকে সঠিকভাবে গড়ে জাতীয় স্তরে তুলে ধরাই ছিল পাখির চোখ । কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে মাঝের দুটো মরসুমে সব পরিকল্পনা উল্টেপাল্টে গিয়েছে ৷ 58 জন তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলারকে নিয়ে ছয় জন কোচ তিনবেলা ফুটবল নিয়ে মগ্ন থাকতেন ৷ এটাই ছিল বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমির রোজনামচা ।

শুধু খেলা নয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল । বিএফএ-র প্রধান কোচ অনন্ত ঘোষ জানান, করোনা পরিস্থিতি তাঁদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে গেল । যা সামলে ফের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ । করোনা ভাইরাসের প্রথম তরঙ্গে ফুটবল শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । তারপর অবস্থার বিচারে অ্যাকাডেমিকে সেফ হোমে পরিণত করা হয়েছে । দ্রুত চালু হবে বলে বলা হলেও তার দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি ।

অনন্ত ঘোষ বলেছেন, "বলা হয় বাংলা থেকে ফুটবলার উঠে আসে না । আমরা যেভাবে এগোচ্ছিলাম তাতে তো চ্যালেঞ্জ নিয়ে এর জবাব দিতাম । অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় লিগের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম । অনূর্ধ্ব-18 তে তৃতীয় হয়েছি । দু‘জন ফুটবলার অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় দলে নির্বাচিত হয়েছিল । কিন্তু পরিস্থিতি সব শেষ করে দিল ৷"

আরও পড়ুন : বায়ার্ন মিউনিখে বাংলার শুভ পাল, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

অ্যাকাডেমির ছাত্র আকাশ সোরেন অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন । কিন্তু করোনার প্রকোপ তাকে শুধু বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য করেনি ৷ পরিবারের জীবন ধারণের লড়াইয়ে কাজে নামতে বাধ্য হয়েছে সে। একই অবস্থা জুলফিকার গাজির । অনন্ত ঘোষ বলেছেন, "ভারতীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পেয়ে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল তা শেষ হয়ে গেল বলা যায় । অতি নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে 58 জন ফুটবল শিক্ষার্থী । এখন ওরা বাড়িতে । পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না । ফলে সার্বিক একটা অধঃপতন হচ্ছে ৷"

সাড়ে সাতশো টাকা করে অ্যাকাডেমির ফুটবলারদের জলপানি দেওয়া হত । গত বছর পুজোর সময় সাড়ে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল ৷ পরে সেটাও বন্ধ । বন্ধ কোচেদের মাস মাইনে । প্রশাসনিক তরফে দীপ হাজরা আশ্বস্ত করেছেন ৷ নির্বাচন চলে আসায় এই জলপানি, মাইনে বন্ধ রয়েছে । দ্রুত তা চালু হবে । ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছিলেন, তারা অ্যাকাডেমি থেকে দল তৈরি করে কলকাতা লিগে খেলাবেন । সেই প্রক্রিয়াও ধাক্কা খেয়েছে । সবদিক থেকে একটা অচলাবস্থা বেঙ্গল ফুটবল অ্যাকাডেমিতে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details