আমেদাবাদ, 5 অক্টোবর: বাউন্ডারি গণনায় পিছিয়ে পড়ে গত বিশ্বকাপে জুটেছিল রানার্স তকমা ৷ আইসিসি'র জটিল নিয়মের প্যাঁচে ফেলে যেন জোর করে তাঁদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বিশ্বকাপের ট্রফি ৷ মাঝে চার বছরে বদলে গিয়েছে অনেককিছুই ৷ বদলায়নি কেবল তাঁদের খেলার ধরন ৷ বুধবার আমেদাবাদে অধিনায়কদের ফটো সেশন অনুষ্ঠানেই জোরালো প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন ৷ তাঁর সেই মন্তব্য যে নেহাত ফাঁকা আওয়াজ ছিল না, উদ্বোধনী ম্যাচে বুঝিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড ৷ ডেভন কনওয়ে এবং রচিন রবীন্দ্রর জোড়া শতরানে বিশ্বচ্য়াম্পিয়নদের মাটি ধরাল 'ব্ল্যাক ক্যাপস' ৷ ইংল্যান্ডের 283 রানের লক্ষ্যমাত্রা মাত্র উইকেট হারিয়েই তুলে দিল কিউয়িরা ৷ তাও আবার 82 বল বাকি থাকতেই ৷
তাবড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই গতবারের দুই ফাইনালিস্টকে শেষ চারে দেখছেন এই বিশ্বকাপে ৷ তাই হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াইয়ের বাতাবরণ ছিল নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ৷ দেশজুড়ে বিশ্বকাপের গনগনে আঁচ যদিও ফাঁকা গ্যালারি দেখে বোঝার উপায় ছিল না ৷ তবে বিশ্বজয়ের অভিযানটা জিতেই শুরু করতে চেয়েছিল দু'দল ৷ কেনের পরিবর্তে প্রথম ম্যাচে কিউয়ি অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলানো টম ল্যাথাম টস জিতে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ শুরুটা ভালো করেও লম্বা হয়নি দুই ইংরংজ ওপেনারের ইনিংস ৷ ডেভিড মালান ফেরেন 14 রানে, জনি বেয়ারস্টো করেন 33 রান ৷
110 রানে 4 উইকেট খুইয়ে খানিক বেকায়দায় পড়ে যাওয়া বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মিডল-অর্ডারে ভরসা দেন জো রুট ৷ সঙ্গী জস বাটলারকে নিয়ে তাঁর 70 রানের জুটি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যমাত্রার পুঁজি জোগাড় করে দেয় ৷ অধিনায়ক বাটলার (42 বলে 43) না-পারলেও অর্ধশতরান পূর্ণ করেন রুট ৷ 4টি চার, একটি ছয়ে 77 রানের (86 বল) ইনিংস আসে রুটের থেকে ৷ মূলত প্রাক্তন টেস্ট অধিনায়কের ব্যাটেই 50 ওভারে 9 উইকেট হারিয়ে 282 রান তোলে ইংরেজরা ৷
আরও পড়ুন:একা কুম্ভ রুট! কিউয়িদের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা
এরপর নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র শো ৷ 10 রানে উইল ইয়ংয়ের উইকেট খোয়ানো কিউয়িদের সহজ জয় এনে দিলেন জোড়া ব্যাটার ৷ দু'জনের ব্যাট থেকে এল ঝকঝকে শতরান ৷ অভিষেক টেস্ট ম্যাচে শতরানের নজির গড়া কনওয়ের ব্যাট থেকে বিশ্বকাপ আত্মপ্রকাশেও এল সেঞ্চুরি ৷ খেললেন 121 বলে অপরাজিত 152 ৷ মারলেন 19টি চার, 3টি ছয় ৷ দোসর হলেন রবীন্দ্র ৷ 11টি চার, 5টি ছয় হাঁকিয়ে 96 বল খেলে 123 রানে অপরাজিত থাকলেন বছর তেইশের ক্রিকেটার ৷ ইংরেজ বোলারদের কাছে অনেকটা 'সিলেবাস বহির্ভূত' কোয়েশ্চেন হয়ে দেখা দিলেন তিনি ৷ জোড়া শতরানে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ওভারেই ম্যাচ জিতে নিল কিউয়িরা ৷ ক্রিস ওকস, মার্ক উড, মইন আলি, আদিল রশিদকে পাড়া ক্রিকেটের স্তরে নামিয়ে গত বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের মধুর বদলা নিল 'ব্ল্যাক-ক্যাপস' ৷