আমেদাবাদ, 30 মে: শেষ বলে দরকার ছিল চারটি রান। মোহিত শর্মার বল থার্ড ম্যান দিয়ে ঠেলে যখন বাউন্ডারি পার করলেন জাড্ডু, ডাগ-আউটে তখনও নিস্পৃহ ধোনি। বহু যুদ্ধের নায়ক যেন বুঝিয়ে দিলেন, প্রথম বলে ফিরলেও তিনিই রাজা। যেমনভাবে তাঁর কোলে উঠে জাদেজা বোঝালেন, এই মাহেন্দ্রক্ষণ মহেন্দ্রর জন্যই ৷
রবিবার, 28 মে মাঠের লড়াই দেখা সম্ভব হয়নি। সেদিন চ্যাম্পিয়ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টিই। ফাইনাল গড়ায় রিজার্ভ ডে-তে। সোমবারও বৃষ্টি হল। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে চেন্নাইকে 215 রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছিল হার্দিকের গুজরাত ৷ যদিও ফের বৃষ্টিতে সময়ের নিরিখে ম্যাচ গড়ায় তৃতীয় দিনে। রাত 12.10 নাগাদ ম্যাচ শুরু হয়। ডিএলএসে চেন্নাইয়ের পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় 15 ওভারে 171। শেষ ওভারে নাটকীয় পরিস্থিতি। 13 রান প্রয়োজন ছিল চেন্নাইয়ের। অভিজ্ঞ মোহিত শর্মা প্রথম চার বলে দেন মাত্র তিন রান। 'স্যর জাদেজা' শেষ দু'বলে ছয় এবং চার মেরে চেন্নাইকে পঞ্চম ট্রফি জেতান।
মাহি এদিন প্রথম বলে ফিরেছেন। ফিনিশার ধোনিকে প্রবলভাবে চেয়েছিল প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠ। নেতার কেরামতি দেখতে আমেদাবাদের মাঠ ভরেছিল ইয়েলো আর্মিতে। ব্যাট হাতে নয়, ধোনি কেরামতি দেখালেন ক্রিকেটিয় বুদ্ধিতে। খড়গপুরের প্ল্যাটফর্মে শুরু হওয়া লড়াইটা শুধু পুরো বিশ্ব দেখেনি, আত্মস্থও করেছে। দেখেছে কীভাবে ক্রিকেটার থেকে ফিনিশার হয়ে উন্নিত হয়েছেন রাঁচির বড় চুলের ছেলেটা। কীভাবে চরম উত্তেজনাতেও শান্ত থেকেছেন তিনি। এদিনের মোতেরাও পদে পদে দেখল সেই চিত্র। ভালো শুরু করেও ফিরেছেন রায়াডু। প্রথম বলে ফিরেছেন তিনিও। তাতেও কপালে চিন্তার ভাঁজ ছিল না ৷
আরও পড়ুন:ফাইনালের রিজার্ভ ডে-তেও বৃষ্টির পূর্বাভাস, ম্যাচ ভেস্তে গেলে কে হবে চ্যাম্পিয়ন ?
শান্তভাবে ডাগ-আউটে বসলেন। বুঝিয়ে দিলেন, বহু যুদ্ধের ঘোড়া কামানের শব্দে ডরায় না। যেভাবে জয়সূচক চারের পর তাঁর বন্ধ চোখ বুঝিয়ে দিল, জয়টাই স্বাভাবিক, চ্যাম্পিয়নরা পরাজয়ে বিশ্বাসী নয়। তারা হারতে জানে না। বুড়ো হয়েছেন, হাড়ের ভেল্কিও কমেছে। অটুট থেকে গিয়েছে গ্রে ম্যাটার, শান্ত-নিস্পৃহ মাথাতে চলতে থাকা কঠিন অংকের সমীকরণ। মোতেরায় সম্ভবত শেষ আইপিএল ম্যাচ খেলতে নামা ধোনি বুঝিয়ে দিলেন, মহেন্দ্ররা অবিনশ্বর, তাঁরা ফুরিয়ে যান না।