কলকাতা : তাঁর সঙ্গে বহু ছবিতে কাজ করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত । মেয়ের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন । শুধু একজন সহ-অভিনেতা নন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ঋতুপর্ণার অভিভাবকও । 'শ্বেত পাথরের থালা', 'পারমিতা একদিন', ' বসু পরিবার', 'বেলাশেষে' পিতৃতুল্য এই মানুষটিকে হারিয়ে আজ বড় অসহায় বোধ করছেন টলিকুইন ।
ঋতুপর্ণা বলেন, "কোনও কাছের মানুষ চলে গেলে, মানুষ যেমন অসহায় হয়ে যায় আমারও ঠিক সেই রকমই একটা অবস্থা হয়েছে । ঠিক বুঝতে পারছি না কী বলব । নিজেকে কীভাবে সামলাব বুঝতে পারছি না । মনটা অনেক দিন ধরেই খারাপ ছিল । সৌমিত্রকাকু অসুস্থ ছিলেন । অসুস্থতার খবর পেলেই প্রার্থনা করতাম, যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান । জীবনের লম্বা পরিসরে অনেকবারই অসুস্থ হয়েছেন সৌমিত্রকাকু । বারবার আমাদের হাসিয়ে ফিরে এসেছেন । আমাদের কখনওই নিরাশ করেননি । কিন্তু আজকে একেবারেই নিরাশ হয়ে গেলাম ।"
তিনি আরও বলেন, "আজ থেকে পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর আগে যখন অভিনয় করতে এসেছিলাম, সেই দিন থেকেই সৌমিত্রকাকুর আদরের স্পর্শ পেয়েছিলাম । এত ভালোবাসা, এত আবেগ, এত শিক্ষা - জানি না খুব একটা অন্য কারও কাছে পেয়েছি কি না । কত বছর ধরে দেখেছি সৌমিত্রকাকুকে । সে যেন এক অদ্ভুত সম্পর্ক । সৌমিত্রকাকুর সঙ্গে ভয়ে ভয়ে অভিনয় করা, সেই শুরুটা হয়েছিল 'শ্বেত পাথরের থালা'-র সঙ্গে । 'শেষচিঠি' বলে একটা ছবি করেছিলাম তনুজা আন্টি আর সৌমিত্রকাকুর সঙ্গে । পরিচালক ছিলেন শিশির মজুমদার, সেটা আমার জন্য একটা সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা । সৌমিত্রকাকু তখন অনেক কম বয়স্ক ছিলেন । পরবর্তীকালে আমি সৌমিত্রকাকুকে বলেছিলাম, 'আপনার মতো এত হ্যান্ডসাম কাউকে দেখিনি ।' রঙিন শার্ট পরতেন সৌমিত্রকাকু । আমি জিজ্ঞেস করতাম, 'এইটা তোমার কোনও গার্লফ্রেন্ড দিয়েছে ?' বলতেন, 'এইটা আমার গার্লফ্রেন্ড জার্মানি থেকে পাঠিয়েছে ।' অদ্ভুত সব সময় কাটিয়েছে এই মানুষগুলোর সঙ্গে । আজ অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে । কী বলব আমি জানি না ।"
তবে শুধু ঋতুপর্ণাই নন । শোকপ্রকাশ করেছেন ইন্ডাস্ট্রির একাধিক তারকা ।