দু'জনই এই প্রজন্মের অভিনেতা। বাংলা ছবিতে নিজেদের জাত বুঝিয়ে দিয়েছেন দু'জনেই। পারিবারিক সূত্রে থিয়েটার রয়েছে তাঁদের রক্তে। একজন জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, অপরজন কিন্তু পিছিয়ে নেই। কথা হচ্ছে দুই বন্ধু ঋদ্ধি সেন ও ঋতব্রত মুখার্জিকে নিয়ে। 'নগরকীর্তন' দেখে মন্ত্রমুগ্ধ ঋতব্রত। আর সে কথাই ফুটে উঠল তাঁর ফেসবুকের দেওয়ালে। পালটা ঋদ্ধিরও উত্তর এল সেখানেই...
সম্প্রতি ঋতব্রত মুখার্জি লেখেন, "এই ছবির যা ভাষা, যা মেকিং, যা ন্য়ারেশন, সেরমক আন্তর্জাতিক মাপের কাজ কৌশিক গাঙ্গুলি আগেও করেছেন, কারণ উনি পারেন। উনিই পারেন। তাই এই ছবি ভালো বা খারাপ বলা যায়না। 'নগরকীর্তন' একটা class।"
ঋদ্ধি সম্পর্কে লেখেন, "আমার বন্ধু ঋদ্ধি। আমি এইটা গর্ব করে বলি যে আমি ঋদ্ধির সবচেয়ে পুরোনো বন্ধু এবং vice-versa। আমরা দু'জন হাফ-প্যান্টের বন্ধু। একসঙ্গে বড় হয়েছি, অ্যাকাডেমিতে কাজ করেছি, একসঙ্গে নাটক, সিনেমা দেখেছি, খেতে গেছি, ছবিতে, টিভিতে কাজ করেছি, বাওয়ালি করেছি। ওর প্ৰথম ফোন, আমার প্রথম প্রেম, ওর ভাঙা প্রেম, আমার crush, ওর জন্মদিন, আমার বাড়িতে nightstay, আমার প্রথম ক্যামেরা, ওর কেনা 'go-pro', আমার প্রথম শর্ট ফিল্ম। আরও অনেক কিছু একসঙ্গে দেখেছি আমরা।"
অভিনয় প্রসঙ্গে ঋতব্রত লেখেন, "তারপর আমি ছবিটা দেখলাম। সত্যি বলছি, আমি ঋদ্ধিকে ছাড়া কারোর দিকে চোখ ফেরাতে পারিনি। আমায় যদি কেউ না বলে দিত যে ওই অভিনেতার নাম ঋদ্ধি সেন, আমি জানতাম 'পুঁটি' আসল। কেউ অভিনয় করেনি। কী করে পারিস রে? কী করে? এই অভিনয়কে ভালো বা খারাপ কী করে কেউ বলে? এতো institution। একটা শিক্ষণীয় কাজ। আমি ওকে বলেছি, যে ওর এক্ষুনি উচিত একটা workshop নেওয়া বা শেখানো কী করে একটা চরিত্র গড়ে তুলতে হয়, কী করে সেটাকে সারা শরীর-মস্তিষ্ক-প্রাণ দিয়ে অনুভব করে 'অভিনয়' করতে হয়। "
ঋদ্ধি পালটা লেখেন, "লোকে বলে বয়সকে প্রণাম করতে নেই, মানুষকে প্রণাম করতে হয়, তাঁর কাজকে প্রণাম করতে হয়, আজকে এই মানুষটির থেকে শিখলাম মন কাকে বলে, যে মনটাকে আমরা রোজ কম্প্রোমাইজ়, কম্পিটিশন, কমপ্লেক্সর মতো শব্দ দিয়ে পিছলে ফেলেছি প্রতিদিন, যে মনটার ভিতর আমরা চেষ্টা করছি প্রতিদিন গোটা পৃথিবীটাকে আয়ত্তে আনতে, আর না পারলেই সেই পৃথিবীটা ঠুনকো ও মিথ্যে হয়ে যায় আমাদের কাছে, তোর মনটাকে প্রণাম বন্ধু, এরকমই থাকিস। বড্ড চাপ বাড়িয়ে দিলি আমার জন্য। চোখে জল, মুখে হাসি...ভালোবাসি।"