কলকাতা : কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। প্রায় প্রত্যেকেই এখন গৃহবন্দী। বাড়িতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটছে সময়। বেশ কয়েকটি সমস্যার মতো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আরও একটি সামাজিক সমস্যাও। গার্হস্থ্য হিংসা নাকি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে । অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন । সতর্কও করেছে তার। কিন্তু তাতেও কি মিটছে সমস্যা ? বিষয়টি নিয়ে পরিচালক, অভিনেত্রী তথা সমাজকর্মী সুদেষ্ণা রায়ের সঙ্গে কথা বলল ETV ভারত।
সুদেষ্ণা রায় বলেন, "এই সময় ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অসম্ভব মাত্রায় বেড়ে গেছে। সেটা নিয়ে আমরা কাজও করছি। শুধু মহিলারা নন, শিশুদের উপরও ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের মাত্রা বেড়েছে। একটা চাইল্ড লাইন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। আমাদের কমিশন থেকেও এই ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের উপর একটা বই তৈরি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কীভাবে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স শিশুদের ক্ষতি করে। এখন আমরা এই বিষয়ে সর্বত্রই সতর্ক করছি লোকজনকে, পুলিশ, প্রশাসনকে। তাঁরা প্রত্যেকেই খুব সজাগ রয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন, "আমি বলব, যে একসঙ্গে থাকাটা শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত। ভায়োলেন্স কখনই করা উচিত নয়। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো নিয়মিত মদ্যপান করেন যাঁরা, তাঁরা এটা করছেন। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স খুব বড় ব্যাপার। আমাদের স্টাডি বলছে, যে রেজ়াল্ট পেয়েছিলাম, সেটা খুবই শকিং ছিল। অধিকাংশ বাড়িতেই, সব ধরনের সমাজেই, এটা রয়েছে। সেজন্য আমাদের সচেতন থাকা দরকার। এর জন্য মেয়েদের পাশে মেয়েদের দাঁড়ানো উচিত। প্রশাসন তো আছেই। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে হবে। সেটা বললে নিশ্চয় সেই অপরাধের শাস্তি হবে। মানুষ পদক্ষেপ করছে এবং করে। এই লকডাউনের মাঝে এখন ডায়েরিও নিচ্ছে পুলিশ। আমরা চিঠিও পাঠিয়ে রেখেছি ডিপার্টমেন্ট অফ ওমেন অ্যান্ড চাইল্ড সোশাল ওয়েলফেয়ারে।"
লকডাউন শুরুর পর থেকেই গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে মহিলা কমিশনের কাছে । মার্চের প্রথম সপ্তাহে যেখানে গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে 116টি অভিযোগ এসেছিল, সেখানে মার্চের (23 মার্চ থেকে 1 এপ্রিল) শেষ সপ্তাহে সেই অভিযোগের সংখ্যাটা দাঁড়ায় 257 । এই প্রসঙ্গে NCW প্রধান রেখা শর্মা বলেন, "লকডাউনের পর গার্হস্থ্য হিংসার পরিমাণ দ্বিগুন হয়েছে । সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা ও পঞ্জাব থেকে ।"