রাষ্ট্রসংঘ, 26 জানুয়ারি: তালিবান মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি সবরকমভাবে চেষ্টা করেছেন, যাতে আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক সেখানকার নারীদের উপর অন্যায়, অত্যাচার বন্ধ করে ৷ এমনকী, বিশ্বের অন্য মুসলিম দেশগুলিকেও এই বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ৷ যাতে ওইসব দেশের সরকার তালিবানকে বোঝায়, এটা একবিংশ শতাব্দী ৷ এই সময় বস্তাপচা, প্রাচীন ধ্যান, ধারণা আঁকড়ে থাকা যায় না ৷ তাঁর এই প্রচেষ্টার কথা নিজেই জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘের উপ-মহাসচিব আমিনা মহম্মদ (Amina Mohammed on Taliban) ৷ তাঁর বার্তা, তালিবান শাসককে "তেরোশো শতক থেকে বেরিয়ে একবিংশ শতকে পৌঁছতে হবে ৷"
আমিনা মহম্মদ নিজে ইসলাম ধর্মাবলম্বী ৷ এই মুহূর্তে তিনি রাষ্ট্রসংঘের পদাধিকারীদের মধ্যে সবথেকে ক্ষমতাশালী মহিলা ৷ অতীতে নাইজেরীয় মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন আমিনা ৷ তিনি জানান, গত সপ্তাহেই তাঁর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন আফগানিস্তানের চার তালিবান মন্ত্রী ৷ সেই দলে তালিবান বিদেশমন্ত্রী এবং উপপ্রধানমন্ত্রীও ছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁরা সকলেই কার্যত একই কথা আউড়ে গিয়েছেন ৷ নির্দিষ্ট ছকের বাইরে কোনও কথা বলতে রাজি হননি তালিবান মন্ত্রীরা ৷
আরও পড়ুন:আকাশ আছে, ছোঁয়ার অধিকার নেই ! তালিবানের গরাদে আটক মহিলা অ্যাথলিটরা
রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি নারীসুরক্ষা এবং নারীর অধিকারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে খোলা মনে আলোচনা করতে চাইলেও তাতে বিশেষ লাভ হয়নি ৷ কারণ, তালিবানের দাবি, নারীদের সুরক্ষিত রাখতেই তারা সবরকম ব্যবস্থা করেছে ! এই প্রসঙ্গে আমিনার মত হল, "ওঁদের কাছে নারীসুরক্ষার যে সংজ্ঞা পেয়েছি, তাকে আমি বলব দমন-পীড়ন ৷"
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ইতিমধ্যেই তালিবান শাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা ৷ সম্প্রতি তালিবানের তরফে নয়া ফতোয়া জারি করে বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠনে মহিলাদের চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ৷ রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা এই নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য তালিবান সরকারকে চাপ দেন ৷ কিন্তু, তালিবান পিছু হঠতে রাজি নয় ৷ অথচ, তাদের ভাঁড়ে মা ভবানী ৷ তাই আর্থিক সাহায্য চাইই চাই ৷ এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, মহিলাদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে গেলে আর্থিক সাহায্য পাওয়াও কঠিন হবে ৷ তাই তালিবানকে তার বস্তাপচা, প্রাচীন ধ্যান, ধারণা ত্যাগ করতেই হবে ৷ তবে, এই হুঁশিয়ারি আদৌ তালিবানের হুঁশ ফেরাবে কিনা, সেই বিষয়ে নিশ্চিত নয় ওয়াকিবহাল মহল ৷