করাচি, 16 জুলাই:পাকিস্তানের এক মন্দিরে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা ৷ রবিবার দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশে রকেট লঞ্চার দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে ওই মন্দিরে ৷ পাশাপাশি মন্দিরে এবং আশপাশের হিন্দুদের বাড়ি লক্ষ্য করেও নির্বিচারে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কাশমোর-কান্ধকোট পুলিশ ৷
হামলার কথা স্বীকার করে নিয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সিন্ধু প্রদেশের কাশমোর এলাকায় মন্দির এবং সংলগ্ন হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালায়। স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দ্বারা নির্মিত ওই মন্দিরে ঢুকে হামলাকারীরা নির্বিচারে গুলি চালায় বলেও অভিযোগ ৷ পরে কাশমোর-কান্ধকোটের এসএসপি ইরফান সাম্মোর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে ৷
পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা যখন হামলা চালায় সে সময় মন্দির বন্ধ ছিল ৷ উপাসনা স্থান লক্ষ্য করে রকেট লঞ্চার ছোড়ে হামলাকারীরা ৷ একই সঙ্গে পুলিশের ওই কর্তা জানান, মন্দিরটি বাগরি সম্প্রদায়ের দ্বারা পরিচালিত ৷ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয় সেখানে ৷ এদিন ভোররাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। জানা গিয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা নির্বিচারে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এলাকায় তল্লাশী অভিযান চালানো হচ্ছে ৷ পুলিশের অনুমান, আট থেকে নয় জন বন্দুকধারী এই হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল।
বাগরি সম্প্রদায়ের সদস্য ডক্টর সুরেশ জানান, যে দুষ্কৃতীদের ছোড়া রকেট লঞ্চারগুলি না ফাটার দরুণ কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি ৷ পাশাপাশি তাদের সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, এই ঘটনা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি করেছে ৷ যদিও ঘটনাস্থলে এসে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছে পুলিশ ৷ একই সঙ্গে, তাদের নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
কাশমোর এলাকায় প্রচুর হিন্দুদের বাস ৷ পাবজি খেলার মধ্যে দিয়ে ভারতীয় যুবকের সঙ্গে প্রেম এবং তারপর সীমা হায়দার জাখরানির ভারতে চলে আসার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই কাশমোর এবং ঘোটকি এলাকায় দুষ্কৃতীরা হিন্দু মন্দির এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের আক্রমণ করার হুমকি দেওয়ার কয়েকদিনের মাথাতেই এই হামলার ঘটনা ঘটলো ।
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান-3 মানবজাতির কল্যাণ করবে, ভূটানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা মোদির
অন্যদিকে, পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) সিন্ধুর কাশমোর এবং ঘোটকি জেলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ৷ অবিলম্ব বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সিন্ধু স্বরাষ্ট্র বিভাগকে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছে তারা। করাচিতে একাধিক প্রাচীন হিন্দু মন্দির রয়েছে। হিন্দুরা পাকিস্তানের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও ৷ পাকিস্তানের হিন্দু জনসংখ্যার অধিকাংশই সিন্ধু প্রদেশে বাস করে ৷