ইসলামাবাদ, 28 মার্চ: একদিকে চরম আর্থিক অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা ! এই দুইয়ের কোপে এমনিতেই জেরবার পাকিস্তান ৷ এই অবস্থায় নতুন টানাপোড়েন শুরু হল দেশের বিচারব্যবস্থার একেবারে শীর্ষস্তরে ৷ প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অর্থাৎ পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি প্রয়োজন মতো বেঞ্চ তৈরি করতে এবং স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলার রুজু করার নির্দেশ দিতে পারেন ৷ পদাধিকার বলে তাঁর সেই ক্ষমতা রয়েছে ৷ কিন্তু, এবার প্রধান বিচারপতির সেই ক্ষমতাকেই চ্য়ালেঞ্জ করলেন অন্য দুই বিচারপতি (Cracks in Judiciary of Pakistan) !
এই ঘটনার জেরে চর্চা শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেরই দুই বিচারপতিকে নিয়ে ৷ এঁরা হলেন বিচারপতি সইদ মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি জামাল খান মন্ডোখালি ৷ সংশ্লিষ্ট একটি মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির হাতে থাকা একক ক্ষমতার বিরোধিতা করেছেন এই দু'জন ৷ তাঁদের মতে, প্রধান বিচারপতি এককভাবে যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ভোগ করেন, তা পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে ৷
পাকিস্তানের পঞ্জাব এবং খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশে নির্বাচনের ক্ষেত্রে গত 22 ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি নোটিশ জারি করেন প্রধান বিচারপতি ৷ এই একই মামলায় গত 1 মার্চ রায়দান করে পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ ৷ 3-2 সংখ্যাগরিষ্ঠতায় স্থির হয়, পাক নির্বাচন কমিশন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির সঙ্গে পরামর্শ করে খাইবার পখতুনখোয়ায় ভোট প্রক্রিয়া সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ৷ এই রায়ে একেবারেই সন্তুষ্ট ছিলেন না বিচারপতি সইদ মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি জামাল খান মন্ডোখালি ৷ কারণ, নিয়ম অনুসারে পাকিস্তানে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার জন্য সর্বনিম্ন 90 দিনের সময় হাতে রাখতে হয় ৷ কিন্তু, জরুরি ক্ষেত্রে, যেমন- রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে এই নিয়ম অমান্য করা যেতে পারে ৷ সংশ্লিষ্ট পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের রায়ের জেরে এক্ষেত্রেও সেই ক্ষমতা পেয়েছে পাক নির্বাচন কমিশন ৷
আরও পড়ুন:কিছুটা স্বস্তি, সাতটি মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন ইমরান
আর এখানেই আপত্তি জানিয়েছেন দুই বিচারপতি ৷ নিজেদের ভিন্ন মত পোষণ করে 28 পৃষ্ঠার একটি নোট দিয়েছেন তাঁরা ৷ তাঁদের ব্যাখ্যা, সংবিধানের 184(3) নম্বর ধারা অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের মূল এক্তিয়ার শুধুমাত্র বিবেচনামূলক নয় ৷ সেইসঙ্গে, বিশেষ এবং অসাধারণ ৷ যা কেবলমাত্র ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ জনগণের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ঘটনাতেই এই এক্তিয়ার ব্যবহার করা যায় ৷ কিন্তু, সংশ্লিষ্ট মামলায় প্রধান বিচারপতি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ জারি করে আদালতের মূল এক্তিয়ার লঙ্ঘন করেছেন বলে মনে করছেন দুই বিক্ষুব্ধ বিচারপতি ৷ আর সেই কারণেই প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা পর্যালোচনা করার দাবি তুলেছেন তাঁরা ৷