মস্কো, 7 অগাস্ট : বিশ্বে প্রথমবার COVID-19-এর ভ্যাকসিন আনতে চলেছে রাশিয়া । আপাতত এমনই জানানো হয়েছে রাশিয়া সরকারের তরফে । সে দেশের প্রশাসন আরও জানিয়েছে, 10-12 অগাস্টের মধ্যেই এই ভ্যাকসিন ব্যবহারে অনুমোদন মিলবে । অনুমোদনের পর অক্টোবরের শুরুর দিকে পুরোদমে ভ্যাকসিনেশনের কাজ শুরু হবে ।
ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণায় সাহায্য করেছে রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড । এই ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিভ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছে গামালেয়া নামে মস্কোর এক গবেষণা সংস্থা । দিন কয়েকের মধ্যেই ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়টি অনুমোদন পেতে চলেছে । তবে এখনও তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল বাকি রয়েছে । তারপরই চূড়ান্ত পদক্ষেপ করা হবে ।
মে মাসের শুরুতে গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউশনের প্রধান অধ্যাপক আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ ভ্যাকসিনের পরীক্ষার বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন । 17 জুন 76 জনের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয় এই ভ্যাকসিন । এর মধ্যে অর্ধেকের শরীরে তরল আকারে ও অর্ধেকের শরীরে পাউডার আকারে ভ্যাকসিনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয় ।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরস্ক বলেন, "এই মাসেই ভ্যাকসিন প্রয়োগে অনুমোদন মিলবে । তারপর প্রথমেই তা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হবে । পরে অক্টোবরের শুরুতে গণ ভ্যাকশিনেশন শুরু হবে ।" রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসে এই ভ্যাকসিনের বাণিজ্যিক উৎপাদনও শুরু করে দেওয়া হবে ।
এ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে । এ বিষয়ে জর্জটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লরেন্স গোস্টিন বলেন, "ভ্যাকসিনের প্রয়োগমূলক পরীক্ষা নিয়ে রাশিয়ার তরফে এখনও কোনও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়নি । এটি যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় । গতমাসে অ্যামেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার তরফেও একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে । ওয়েস্টার্ন ল্যাব থেকে ভ্যাকিসনের তথ্যচুরির অভিযোগও উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে । তবে রাশিয়া সরকারের তরফে এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । তাদের দাবি, এই ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই । এক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ নিয়ে WHO- জারি করা নির্দেশিকাও একটি প্রশ্ন রেখে যাচ্ছে । আপাতত আগামী সপ্তাহের অপেক্ষা ।
রাশিয়াবাসী বলছে, 1957 সালের 4 অক্টোবর । স্পুটনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে সেদিন ইতিহাস তৈরি করেছিল রাশিয়া । ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আরও একবার ইতিহাস সৃষ্টির দোরগোড়ায় দেশ ।