পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / international

Afghanistan : আফগান সেনার জন্য খরচ করা কয়েক বিলিয়ন ডলারে লাভ হয়েছে তালিবানদেরই

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক সমরাস্ত্র থাকা সত্ত্বেও আফগান সেনার মধ্যে লড়াই করার কোনও মানসিকতাই ছিল না ৷ টাকা দিয়ে ইচ্ছাশক্তি কেনা যায় না ৷ নেতাও কেনা যায় না টাকা দিয়ে ৷

billions-spent-on-army-of-afghanistan-ultimately-benefited-taliban
Afghanistan : আফগান সেনার জন্য খরচ করা কয়েক বিলিয়ন ডলারে লাভ হয়েছে তালিবানদের

By

Published : Aug 17, 2021, 2:11 PM IST

ওয়াশিংটন, 17 অগস্ট : প্রায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে (Afghanistan) সৈন্যবাহিনী তৈরি ও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৷ এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় 83 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ তাতে লাভ যে কিছুই হয়নি, তা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে ৷ আফগান সেনা কোনও লড়াই ছাড়াই তালিবানের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে ৷ কোথাও কোথাও তো একটা গুলিও চলেনি ৷ ফলে বোঝাই যাচ্ছে আফগান সেনার (Afghan Army) জন্য খরচ করা অর্থে আসলে লাভবান হয়েছে তালিবানরাই (Taliban) ৷

গোটা আফগানিস্তানই এখন তালিবানের দখলে ৷ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন নাগরিকরা ৷ ইতিমধ্যে পালিয়ে গিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ গনিও (Ashraf Ghani) ৷ দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা এখন তালিবানদের হাতে ৷ ফলে সে দেশের ভান্ডারে যা অস্ত্র, হেলিকপ্টার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States) দেওয়া ফায়ারপাওয়ার গান-সহ আরও অনেক এখন তালিবানি হেফাজতে ৷

আরও পড়ুন :Afghanistan Situation : আশরাফ গনি থেকে তালিবানের শাসনে কাবুলের পরিস্থিতি অনেক ভাল, মত রাশিয়ার

আফগান সেনার কাছে যে সমস্ত আধুনিক সমরাস্ত্র ছিল, তা ওই দেশের জেলা শহর দখল করার সময়ই চলে যায় তালিবানদের হাতে ৷ তার পর তারা যখন প্রাদেশিক রাজধানী ও সেনা ঘাঁটিগুলি দখল করতে শুরু করে, তখন তাদের হাতে কমব্যাট এয়ারক্রাফট-সহ আরও আধুনিক সমরাস্ত্র চলে যায় ৷ এর পর বাকি যা ছিল, কাবুল (Kabul) দখলের পর তাও চলে গিয়েছে তালিবানের দখলে ৷ সব মিলিয়ে প্রচুর পরিমাণে সমরাস্ত্র তাদের হেফাজতে চলে গিয়েছে বলে সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা আধিকারিক জানিয়েছেন ৷

ওই আধিকারিকের প্রকাশ্যে মন্তব্য করার এক্তিয়ার নেই ৷ তাই তিনি নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আফগান সরকার ও সেদেশের সেনাকে বুঝতে ভুল করেছিল মার্কিন সৈন্যবাহিনী (US Army) এবং গোয়েন্দারা ৷ সেই কারণে লড়াই করার পরিবর্তে গাড়ি ও অস্ত্র নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আত্মসমর্পণ করে দিয়েছে ৷ এখন বোঝা যাচ্ছে আধুনিক সমরাস্ত্র থাকা সত্ত্বেও আফগান সেনার মধ্যে লড়াই করার কোনও মানসিকতাই ছিল না ৷

আরও পড়ুন :Afghanistan : পিলপিল করছে মানুষ, 600-র বেশি যাত্রীকে নিয়ে উড়ল বিমান

মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের প্রধান মুখপাত্র জন কার্বি সোমবার মন্তব্য করেন, টাকা দিয়ে ইচ্ছাশক্তি কেনা যায় না ৷ নেতাও কেনা যায় না টাকা দিয়ে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবসরপ্রাপ্ত সেনা লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডৌগ লুটে জানান, আফগান সেনাকে প্রচুর সাহায্য করা সত্ত্বেও তাদের মধ্যেই কোথাও খামতি থেকে গিয়েছিল বলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হল ৷ ডৌগ লুটে জর্জ বুশ ও বরাক ওবামার সময় আফগান যুদ্ধের কৌশল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷

আফগান সেনার কোথায় খামতি থেকে গিয়েছিল, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, সেনার সংখ্যা যতই হোক এবং তাদের কাছে যতই অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র থাকুক না কেন, ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল ছাড়া কোনও লড়াই জেতা সম্ভব নয় ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সমরাস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করা সম্ভব ছিল, তাই করা হয়েছে ৷ কিন্তু আসল লড়াই তো লড়ার কথা ছিল আফগান সেনার ৷ যা তারা পারেনি ৷

আরও পড়ুন :Ashraf Ghani : হেলিকপ্টার ও চার গাড়ি ভর্তি টাকা নিয়ে আফগানিস্তান ছেড়েছেন গনি, দাবি রাশিয়ার

লুটে বলেন, ‘‘তালিবানদের সংখ্যা কম ৷ তাদের শক্তিও কম ৷ আকাশপথে হামলা করাও তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না ৷ তার পরও শুধু ইচ্ছাশক্তির জোরে তারা গোটা আফগানিস্তান দখল করে ফেলল ৷ আর সেটাই চিনতে ভুল করেছে মার্কিন গোয়েন্দারা ৷’’ গত এপ্রিলে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden) জানালেন, তিনি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করবেন, তার পর তালিবানের শক্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জোগাড় করতে পারেননি গোয়েন্দারা ৷

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, বাইডেনের ঘোষণার পর মার্কিন সেনা আফগানিস্তান থেকে সরতে শুরু করে ৷ সেই প্রক্রিয়া মনোবল ভেঙে পড়ে আফগান সেনার ৷ আর তার জেরেই এই বশ্যতা স্বীকার ৷ তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান সেনাকে প্রশিক্ষিত করেছে ৷ সে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছে ৷ কিন্তু আসল সমস্যার দিকে নজর দেওয়া হয়নি ৷ সমস্যাকে এড়িয়ে গিয়ে সাফল্যকে বড় করে দেখানো হয়েছিল ৷

আরও পড়ুন :Joe Biden : সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত সঠিক, সংকটজনক পরিস্থিতি এত তাড়াতাড়ি আসবে ভাবেননি; স্বীকার বাইডেনের

ABOUT THE AUTHOR

...view details