কলকাতা, 31 জুলাই:1938 থেকে 2022, শেষ হল একটি বর্ণময় সঙ্গীত জীবন । 81 বছর বয়সে শনিবার রাত বারোটা পাঁচ নাগাদ চলে গেলেন খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী নির্মলা মিশ্র (Nirmala Mishra Obituary )। বাংলা সঙ্গীতের একটা যুগের অবসান ঘটল আজ । জন্মসূত্রে নির্মলা মিশ্র হলেও বিবাহ সূত্রে তিনি নির্মলা দাশগুপ্ত । সঙ্গীত দুনিয়ায় ঘনিষ্ঠ মহলে 'ঝামেলা দি' নামে পরিচিত ছিলেন নির্মলা । একাধিক বাংলা আধুনিক গানে শ্রোতার মন মাতিয়েছেন নির্মলা মিশ্র ।
তবে বাংলা গানের মাধ্যমে নয় বরং নির্মলা গানের জগতে পা দিয়েছিলেন ওড়িয়া গানের মাধ্যমে ৷ ওড়িয়া ছবি 'বাবা লোকনাথ'-এ প্রথম শোনা গিয়েছিল তাঁর গলা ৷ এরপর অবশ্য বাঙালির প্রিয় কণ্ঠের একটি হয়ে ওঠেন নির্মলা ৷ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল গুপ্ত, পুলক বন্দোপাধ্যায়, নচিকেতা ঘোষের মতো একাধিক কিংবদন্তির সঙ্গে একের পর স্মরণীয় গান উপহার দিয়েছেন স্বর্ণযুগের এই অন্যতম প্রধান শিল্পী ৷ মান্না দে, প্রতিমা বন্দোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠেও গান গেয়েছেন শিল্পী।
1938 থেকে 2022, শেষ হল একটি বর্ণময় সঙ্গীত জীবন তাঁর বিখ্যাত বাংলা আধুনিক গান "আবেশে মুখ রেখে', " বলো তো আর্শি তুমি মুখটি", "'আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী", "ও তোতা পাখি রে", " এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না" আজও ভোলেনি সঙ্গীতপ্রিয় বাঙালি । আর ছায়াছবির জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে "আকাশ এখন যদি", "আমি হারিয়ে ফেলেছি গানের সাথীরে", "রিমিঝিমি রিমিঝিমি", "আবিরে রাঙালো কে আমায়", "চোখের মণি হারিয়ে খুঁজি"। এ ছাড়াও নানা সময়ে লোকসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীতও গেয়েছেন তিনি ।
আরও পড়ুন:গাইতেই চাননি 'এমন একটি ঝিনুক...' অথচ সেই সুরেই ইতিহাস হন নির্মলা
1976 সালে উত্তমকুমারের গীতিনাট্য 'মহালয়া'-তে সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিনি । বিশেষ বন্ধুত্ব ছিল বনশ্রী সেনগুপ্তর সঙ্গে । পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদ ও বাংলা সঙ্গীতমেলা কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যাও ছিলেন তিনি । পশ্চিমবঙ্গ সরকার তরফে ২০১২ সালে 'সঙ্গীতসম্মান' এবং ২০১৩ সালে 'সঙ্গীত মহাসম্মান' ও 'বঙ্গবিভূষণ' সম্মাননা প্রদান করা হয় তাঁকে । নির্মলা মিশ্রকে হারিয়ে শোকে কাতর বাংলার সঙ্গীত জগত থেকে টলিউড। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন শিল্পীরা ।