পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / elections

আন্দোলনের "চাপ", ভোটকর্মীদের সুরক্ষার লিখিত প্রতিশ্রুতি কমিশনের - booth

আজ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর লিখিতভাবে জানিয়ে দিল, "রাজ্যের সর্বত্র ভোটকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া হবে। প্রিজ়াইডিং অফিসার, পোলিং পারসনেল এবং অন্যান্য ভোটকর্মীদের সুরক্ষা কমিশনের প্রাইমারি প্রায়োরিটি।"

ফাইল ফোটো

By

Published : Apr 8, 2019, 9:28 PM IST

কলকাতা, 8 এপ্রিল : "কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার, হতে চাই না রাজকুমার।" এমন স্লোগান তুলেই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন ভোটকর্মীরা। আন্দোলন তীব্র হচ্ছিল। রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় দানা বাঁধছিল বিক্ষোভ। আজ কলকাতাতেও মিছিল করেন ভোটকর্মীরা। কমিশনের কাছে তাঁদের মূল দাবি, ভোটকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আন্দোলনের সেই "চাপ"-এ আজ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর লিখিতভাবে জানিয়ে দিল, "রাজ্যের সর্বত্র ভোটকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া হবে। প্রিজ়াইডিং অফিসার, পোলিং পারসনেল এবং অন্যান্য ভোটকর্মীদের সুরক্ষা কমিশনের প্রাইমারি প্রায়োরিটি।"

আওয়াজ উঠেছিল অনেকদিন আগেই। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, উপযুক্ত নিরাপত্তা না পেলে ভোটের ডিউটি বয়কট করা হবে। তাঁদের দাবি ছিল, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। বক্তব্য ছিল, "আমরা রাজকুমার রায় হতে চাই না।" তাঁদের দাবি ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। কেন্দ্রীয় বাহিনী সব বুথে মোতায়েনের দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। যার শুরুটা হয়েছিল উত্তর দিনাজপুরে। জেলার বিভিন্ন স্কুলে ভোটকর্মীরা ভোটের প্রশিক্ষণ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে এসে একই দাবি জানিয়ে যায় কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ় সহ বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের সংগঠন।

উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রিজ়াইডিং অফিসারের ডিউটি করতে গিয়ে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের রতনপুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার রায় নিখোঁজ হয়ে যান। পরে রেললাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহ। দেগঙ্গার মনিরুল হাসান রাজারহাটে ডিউটি করতে গিয়ে গুরুতর জখম হন। তাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন ভোটকর্মীরা। ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম-সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর দাবি, রাজ্যে অসংখ্য বুথে ভোটকর্মী শিক্ষকদের উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চলে। অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে রাজনৈতিক দলগুলির অন্যায় এবং অনৈতিক আচরণের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হন তাঁরা। তাই নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তাঁরা দাবি জানাচ্ছেন।

ঐক্য মঞ্চের দাবি, "লোকসভা নির্বাচনে প্রত্যেক প্রিজ়াইডিং অফিসারের সঙ্গে কমপক্ষে ৬ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী সহ রাজ্য পুলিশ থাকতে হবে। সুনিশ্চিত করতে হবে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দ্বিগুন হারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটগ্রহণের শেষে EVM জমা দেওয়ার পর রিলিজ় অর্ডার দিয়ে দিলেই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। বাড়ি থেকে বের হওয়া থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার ভার নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।"


এই দাবি নিয়ে আজ ঐক্য মঞ্চ কলকাতার রাজপথে মিছিল করে। মিছিলের পর 5 জনের প্রতিনিধি দল দেখা করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ় আফতাবের সঙ্গে। কিংকরের দাবি, সেখানেও তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন উপযুক্ত নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত ভোটের ডিউটিতে যাবেন না। তখন কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরের বিক্ষোভরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক। বৈঠকের পর রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ় আফতাব বলেন, "ভোটকর্মীদের সুরক্ষা প্রদান আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য। রাজ্যের প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হবে। সব বুথেই থাকবে সশস্ত্র বাহিনী।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details