বিষ্ণুপুর, 24 মার্চ : বাংলায় বিজেপির উত্থানের জন্য বামেদেরই দায়ী করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ বুধবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সভা থেকে তোপ দাগলেন পূর্বসূরী সিপিএমকে ৷ তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, সিপিএমই হাত ধরে বিজেপিকে এ রাজ্যে নিয়ে এসেছে ৷
পাশাপাশি বিজেপির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য নিজের দলের ‘গদ্দার’দেরও যে ভূমিকা রয়েছে, তাও উল্লেখ করতে ভোলেননি মমতা ৷ তাঁর অভিযোগ, কিছু লোক শাসকদলে থেকে ঘুরপথে অনেক টাকা রোজগার করেছে ৷ সেই টাকার ভাগ যাতে বিজেপিকে দিতে না হয়, তারজন্যই ভোটের আগে শিবির বদল করেন তাঁরা ৷ মমতার দাবি, এমন লোকেরা দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে দলের ভালোই হয়েছে ৷ এমনকি, সভামঞ্চ থেকেই এই ‘মীরজাফর’দের ‘গেট আউট’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন তিনি !
দু’হাজার এগারোয় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন ঘাসফুলের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল কাস্তে হাতুড়ি তারা ৷ কিন্তু রাজ্য়ে পালাবদলের পরও গ্রামীণ স্তরে সিপিএম তথা বামেদের অস্তিত্ব একেবারে মুছে যায়নি ৷ যদিও এরপরই ছবিটা বদলাতে শুরু করে ৷ মূলত মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল নেতাদের (তৎকালীন) উদ্যোগেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় দলবদল ৷ বাম-কংগ্রেস ছেড়ে দলে দলে লোকজন তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করে ৷ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, পৌরসভা- সবকিছুরই দখল নেয় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের দল ৷
আরও পড়ুন :পশ্চিমবঙ্গ ধরে রাখা মমতার পক্ষে কঠিন, কিন্তু জিতলে তাঁকে জাতীয় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে
ইদানীংকালে সেই পুরনো চিত্রনাট্যেরই যেন রিপিট টেলিকাস্ট দেখছে বাঙালি ৷ 10 বছর আগে দলবদল শুরু হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষে ৷ আর এবার তৃণমূল ছেড়ে সকলে গিয়ে ভিড়ছে গেরুয়া শিবিরে ৷ যে দলবদলে আবার প্রাক্তন তৃণমূলীদের ভূমিকাই সবথেকে বেশি ৷ সেই তালিকায় সবার উপরে নাম রয়েছে বর্তমানের দুই বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর নাম ৷ ভোটের মুখে যা নিঃসন্দেহে রক্তচাপ বাড়িয়েছে রাজ্যের শাসকের ৷ এইসব দলছাড়াদের গায়ে ইতিমধ্য়েই ‘গদ্দার’, ‘মীরজাফর’-এর মতো ‘উপাধি’ সেঁটে দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ পাশাপাশি, এদিন রাজ্য়ে গেরুয়া হাওয়ার দাপটের জন্য বামেদেরও কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ অথচ একদিন এই বামেদের ঘর ভেঙেই নিজের সংসারের বহর বাড়িয়েছিলেন তিনি !