মালদা, ২৭ মার্চ : তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধেও। আজ দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেইসব অভিযোগের জবাব দিলেন দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি।
আজ তাঁর সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র ও দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের আহ্বায়ক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আজ গোটা দেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদিকে দেশের যোগ্য কাণ্ডারি হিসাবে মেনে নিয়েছে। তিনি এবং দলের কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব আমাকে দক্ষিণ মালদার মতো কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড় করিয়েছেন। এর জন্য আমরা গর্বিত। দক্ষিণ মালদা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং আসন। বিশেষ করে এখানে গঙ্গার ভাঙন আছে, সুরক্ষার অভাব রয়েছে, গ্রামবাসীদের অধিকাংশই দাদন নিয়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যান, বিভিন্ন গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের অভাব রয়েছে, বিশাল গঙ্গায় জেলেদের মাছ ধরার তেমন সুযোগ সুবিধে নেই, এমন অনেক সমস্যা রয়েছে এই কেন্দ্রে। এর সঙ্গে বেকারি, স্বাস্থ্য পরিষেবার অভাবও রয়েছে। আমি এই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেছি। আমার লক্ষ্যই হচ্ছে মালদায় নির্ভয় গ্রাম গড়ে তোলা। আমি দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য নিরাপত্তা ও রোজগারের জন্য গ্রামেগঞ্জে পদযাত্রার মাধ্যমে মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে চলেছি।"
তিনি আরও বলেন, " বিশ্ব নারী দিবসে আমি মালদায় ছিলাম। সেদিন সংখ্যালঘু মানুষজন আমাদের দলে যোগ দিচ্ছিল। তার 24 ঘণ্টার মধ্যেই সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার রবীন্দ্র সরোবর থানায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, আমি নাকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছি। আমি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করছি। আমার জন্মভূমি, কর্মভূমি মালদা। সবসময় পাখির চোখ রেখেছি মালদার উপর। তাহলে আমি রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা কীভাবে বিঘ্নিত করলাম? কীভাবেই বা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দিলাম? এটা হাস্যকর।"
তিনি অভিযোগ করেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই রাজ্যের 50 শতাংশ মহিলা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। এই পার্টি অফিসে শত শত বিজয়ী BJP প্রার্থী প্রাণের ভয়ে পড়েছিলেন। 10 হাজারের বেশি কার্যকর্তা রাজ্য ছেড়ে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। চারদিকে ভয়, শঙ্কা এবং সন্ত্রাসের পরিবেশ। এখানে গণতন্ত্র-রক্ষা যাত্রা করতে দেওয়া হয়নি। দলের রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষকে নামতে দেওয়া হয়নি। এটা বিরোধীদের যে কোনও উপায়ে রুখে দেওয়ার চক্রান্ত। তিনি নিজেও তার শিকার। আসলে জেলায় সব স্তরের মানুষের মধ্যে BJP-কে নিয়ে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। আর তাতেই ভয় পাচ্ছে শাসকদল। সেই উৎসাহ রুখতেই এইসব চক্রান্ত। তিনি বলেন, "গতকাল থেকে আমার কাছে ফোন আসছে। আমার স্বামী রামকৃষ্ণ মিত্র নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি নাকি চক্রান্ত করে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পশ্চিমবঙ্গের পিছনে লাগিয়ে দিচ্ছেন। এটা হাস্যকর। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন প্রায় দেড় বছর ধরে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দীর্ঘ আলোচনার পর নির্ণয় করেন কোন রাজ্যে কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন। এই রাজ্যে কী ধরনের, কতটা কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন তা নির্ধারিত করার একমাত্র অধিকারী কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশ অনুয়ায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই সংখ্যক বাহিনী রাজ্যে পাঠিয়েছে। সেই নিয়মের বাইরে গিয়ে আমার স্বামী কোনও কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তিনি শুধু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা। ফলে এই অভিযোগও হাস্যকর। আসলে যে নির্ভয়দিদি 24 ঘণ্টা, 24 দিন অনশন করতে পারেন। হাজার হাজার কিলোমিটার হাঁটতে পারেন। তাঁকে ভয় পাচ্ছে শাসক।"
- 2012 দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শ্রীরূপাকে মহিলাদের জন্য কাজ করার বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাঁকে স্পেশাল টাস্কফোর্সের চেয়ারপার্সন করা হয়েছিল।
- 2014 লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ দিল্লি কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
- 2015 তিনি BJP-তে যোগ দেন।
- 2019 তিনি দক্ষিণ মালদার BJP প্রার্থী।
তাই এবার তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কে হতে যাচ্ছে?