পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

একমাসের মধ্য়ে শহরের 3টি ব্যাঙ্কের লকার থেকে উধাও কোটি টাকার গয়না

গড়িয়াহাট, নর্দার্ন অ্যাভিনিউ, হেয়ার স্ট্রিট এই তিন জায়গার তিনটি আলাদা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার লকার থেকে উধাও কোটি টাকার সোনার গয়না ৷ লকার খুলতেই মাথায় হাত গ্রাহকদের ৷ কোথায় গেল গয়না ? উত্তর নেই ব্যাঙ্ককর্মীদের কাছেও ৷

gariahat
gariahat

By

Published : Feb 20, 2020, 9:12 PM IST

Updated : Feb 21, 2020, 1:23 AM IST

কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি : যেন ভূতুড়ে কাণ্ড ৷ লকারের চাবি আছে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের কাছে । অথচ শহরের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার লকার থেকে উধাও প্রায় এক কোটি টাকার সোনার গয়না । ব্যাঙ্কের লকার খুলতেই মাথায় হাত গ্রাহকদের ৷ এই ঘটনা কে বা কারা ঘটাল ? তিনটি আলাদা ব্যাঙ্ক, শাখাও আলাদা, তিনটি আলাদা লকার, স্বাভাবিক ভাবে গ্রাহকরাও একে অপরের পরিচিত নন ৷ কিন্তু কোনও একটি অদৃশ্য কারণে তিন গ্রাহকেরই লকার থেকে উধাও প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের সোনার গয়না ৷ ঘটনার তদন্তে নেমে মাথায় হাত পড়েছে গোয়েন্দাদের ৷

এই ঘটনায় প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় হেয়ার স্ট্রিট থানায় 4 ফেব্রুয়ারি ৷ অভিযোগকারী হলেন হাসমুখ রাই ডি প্যাটেল ৷ নাগতলা লেনের বাসিন্দা ৷ তবে দীর্ঘদিন ধরেই সস্ত্রীক মুম্বইয়ে থাকতেন ৷ হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকারা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লকার ছিল তাঁর ৷ 3 ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্কে গিয়ে লকার খুলতেই চোখ কপালে ওঠে বছর 70-এর ওই বৃদ্ধের ৷ লকার খুলতেই দেখতে পান লকার খালি ৷ ওই লকারে প্রায় 25 লাখ টাকার সোনার গয়না ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন হাসমুখ ডি প্যাটেল ৷ কিন্তু ওই দিন লকার খুলতেই দেখেন সোনার গয়না উধাও ৷ ওই শাখায় প্রায় 40 থেকে 50 বছর ধরে লকার আছে বলেও পুলিশকে জানান ওই বৃদ্ধ ৷

ওই ঘটনার আট দিনের মাথায় জানা গেল দ্বিতীয় ঘটনা ৷ দিনটা ছিল 13 ফেব্রুয়ারি ৷ দমদম রোডের বাসিন্দা স্বণালি দত্ত ৷ নর্দার্ন অ্যাভিনিউয়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় একটি লকার ছিল স্বণালির ৷ ওই দিন সকালে ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে লকার খুলতেই দেখেন লকারে থেকে উধাও সোনার গয়না৷ 14 ফেব্রুয়ারি লেকটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা ৷ পুলিশকে জানান, তাঁর পাশাপাশি আরও দুই আত্মীয়ের গয়না ছিল ওই লকারে ৷ সব মিলে প্রায় 42 লাখ টাকার গয়না ৷ কিন্তু ওই দিন সকালে লকার খুলতেই দেখেন দুটি সোনার আঙটি ছাড়া আর কিছুই ছিল না ৷

পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবর অনুয়ায়ি তিন নম্বর অভিযোগটি দায়ের হয়েছে 16 ফেব্রুয়ারি ৷ স্বণালি দত্তের অভিযোগ দায়ের করার ঠিক একদিন বাদে ৷ কড়েয়া থানা এলাকায় ব্রড স্ট্রিটের বাসিন্দা ভীমচন্দ্র মাইতি ৷ পেশায় চিকিৎসক ৷ ভীমচন্দ্র মাইতি ও তাঁর স্ত্রী রেবা মাইতির একটি যৌথ লকার রয়েছে গড়িয়াহাট থানা এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে । সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন ওই দম্পতি । দেশে ফিরেই 15 ফেব্রুয়ারি গড়িয়াহাটের ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে লকার খুলতেই দেখেন সেই একই দৃশ্য ৷ লকার খালি ৷ 16 ফেব্রুয়ারি গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি ৷ পুলিশকে ভীমচন্দ্র মাইতি জানান, লকারটি শেষবার খোলা হয়েছিল 2019 সালের মে মাসে । তারপরই তাঁরা বিদেশে চলে যান । পুলিশের কাছে দাবি করেন, ওই লকারের ভেতরে একটি স্টিলের বাক্স ছিল ৷ তাতেই রাখা ছিল প্রায় 300 গ্রাম সোনার গয়না । লকার খোলার সময় নিয়ম অনুযায়ী ব্যাঙ্ককর্মীর সামনে মাস্টার চাবি দিয়ে সেটি খোলা হয় লকার । প্রথমে মাস্টার চাবিও কাজ করছিল না বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন ভীমচন্দ্র ।

শহরে পর পর তিনটি আলাদা আলাদা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তিনটি আলাদা লকার থেকে কোটি টাকার গয়না খোয়া যাওয়ায় উদ্বিগ্ন কলকাতাবাসী ৷ তিনটি আলাদা FIR হয়েছে তিনটি থানায় ৷ তার মধ্যে দুটি FIR-এ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যাঙ্ককর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ৷ খতিয়ে দেখা হচ্ছে CCTV ফুটেজ ।

Last Updated : Feb 21, 2020, 1:23 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details