পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

ফি বৃদ্ধি নিয়ে ফের বেসরকারি স্কুলগুলিকে হুঁশিয়ারি শিক্ষা দপ্তরের

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর তরফ থেকে বেসরকারি স্কুলগুলিকে ফি বৃদ্ধি নিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হল । হুঁশিয়ারি দেওয়া সেই চিঠি CBSE ও CISCE বোর্ডে পাঠানো হল ।

state education department warns private and un-aided schools
বেসরকারি স্কুলগুলিকে হুঁশিয়ারি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের

By

Published : Apr 23, 2020, 3:52 PM IST

কলকাতা, 23 এপ্রিল : রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে একাধিকবার আবেদন, পরামর্শ দেওয়ার পরও বহু বেসরকারি স্কুল এখনও ফি বৃদ্ধি করে চলেছে । আবার সেই বর্ধিত ফি না দিতে পারলে পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস থেকে ব্রাত্য রাখা হবে বলে অভিভাবকদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে স্কুলের তরফ থেকে । এমন বহু অভিযোগ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে জমা পড়েছে । সেই অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে আবারও স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে রাজ্যের বেসরকারি ও আন-এডেড স্কুলগুলিকে ফি বৃদ্ধি না করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হল । হুঁশিয়ারি দেওয়া সেই চিঠি সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির পাশাপাশি CBSE ও CISCE বোর্ডের কাছেও পাঠানো হয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে ।

কোরোনা ভাইরাস নিয়ে তৈরি পরিস্থিতিতে বহু বেসরকারি প্রাইভেট ও আন-এডেড স্কুল প্রতি বছরের মতোই ফি বৃদ্ধি করে চলেছে । কোথাও কোথাও অন্য বছরের তুলনায় বেশি হারে বাড়ানো হয়েছে ফি । অভিভাবকদের এমন বহু অভিযোগ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে আসে । সেই প্রেক্ষিতে গত 8 এপ্রিল একটি ভিডিয়ো বার্তায় বেসরকারি স্কুলগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, COVID-19 নিয়ে তৈরি পরিস্থিতি বিচার করে ফি বৃদ্ধি না করতে । এছাড়া, যাঁরা আর্থিক কারণে সময়ে ফি দিতে পারছেন না তাঁদের বিষয়টিও মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে অনুমোদন দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর আবেদনের পরও দপ্তরের কাছে বেসরকারি বা আন-এডেড স্কুলগুলির ফি নিয়ে বহু অভিযোগ জমা পড়ে । সেই অভিযোগগুলির ভিত্তিতে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের তরফ থেকে 10 এপ্রিল রাজ্যের বেসরকারি এবং আন-এডেড স্কুলগুলিকে চিঠি পাঠানো হয় ।

হুঁশিয়ারি দেওয়া সেই চিঠি

স্কুলগুলির সংশ্লিষ্ট বোর্ড অর্থাৎ, CBSE ও CISCE বোর্ডকেও পাঠানো হয়েছিল সেই চিঠি । 10 এপ্রিল শিক্ষা সচিবের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, COVID-19-কে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে । কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিভিন্ন বোর্ডের অ্যাফিলিয়েশন থাকা বহু বেসরকারি ও আন-এডেড স্কুল শুধু বর্তমান শিক্ষাবর্ষে ফি বৃদ্ধি করেই থেমে নেই । তাঁরা অভিভাবকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন এই লকডাউনের সময়ে সেই বর্ধিত ফি জমা করতে । শিক্ষামন্ত্রীর আবেদনের ভিত্তিতে এখনও কয়েকটি স্কুল ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেয়নি । গোটা বিষয়টি রাজ্য সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে । এই পরিস্থিতিতে তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, তাঁরা যেন বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন এবং বর্তমান শিক্ষাবর্ষে ফি বৃদ্ধি করা থেকে বিরত থাকেন । দেরিতে ফি দেওয়া বা ফি না দিতে পারার ব্যাপারগুলিও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে বলা হয়েছিল চিঠিতে । তারপর বেশ কয়েকটি নামী বেসরকারি স্কুল এই বছর ফি বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নেয় ।

কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর আবেদন ও নজিরবিহীনভাবে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের চিঠি পাঠানোর পরও কলকাতা সহ জেলার একাধিক বেসরকারি স্কুল এখনও ফি বৃদ্ধি করে চলেছে বলে অভিযোগ । অভিভাবকদের অভিযোগ, বর্ধিত সেই ফি না দিতে পারলে তাঁদের বাচ্চাদের অনলাইন ক্লাস করতে দেওয়া হবে না বলেও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে । অভিভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে আবারও বেসরকারি প্রাইভেট ও আন-এডেড স্কুলগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে হুঁশিয়ারি দিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর । এই বিষয়ে আজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, "প্রাইভেট বিদ্যালয়গুলিকে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয়বার জানানো হল যে, তাঁরা এই মুহূর্তে ফি বৃদ্ধি করতে পারবে না । স্কুলের মাহিনা বাবদ টাকা না দিলে অনলাইনে শিক্ষায় যোগ দিতে না পারার সিদ্ধান্ত সঠিক নয় । সবাইকেই সেই সুযোগ দিতে হবে । এ ব্যাপারে সরকারের মনোভাব যথেষ্ট কঠোর । আশা করি প্রাইভেট স্কুলগুলি সরকারের এই মনোভাব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন এবং অভিভাবকদের উপর মানসিক চাপ তৈরি করা থেকে বিরত থাকবেন ।"

স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈনের তরফ থেকে রাজ্যের সব প্রাইভেট ও আন-এডেড স্কুলগুলিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগে চিঠি পাঠিয়ে বলা সত্ত্বেও আমরা প্রাইভেট স্কুলের অভিভাবকদের থেকে বহু অভিযোগ পাচ্ছি যে, স্কুল কর্তৃপক্ষ চিঠিতে বলা আবেদন মানছে না । যেখানে রাজ্য একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেখানে পড়ুয়াদের স্বার্থরক্ষা করা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত । আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে পূর্ববর্তী চিঠিতে যে আবেদন করা হয়েছে তা মানতে । এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও সমস্যা হলে দপ্তরকে জানাতে পারে স্কুল । কিন্তু, আবেদন না মানলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details