কলকাতা, 6 অক্টোবর : প্রেসিডেন্সি নামটাই যথেষ্ট । কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয় তথা তদানীন্তন প্রেসিডেন্সি কলেজে নিজের পাঠজীবন কাটিয়েছেন অনেকেই । গত বছর পর্যন্তও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ভরতি হওয়ার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো । অনেকেই আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ভরতি হতে না পেরে মুখভার করে বাড়ি ফিরেছিলেন । কিন্তু, সেসব আজ অতীত । বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের স্নাতক কোর্সগুলিতে ভরতি হওয়ার থেকে মুখ ফেরাচ্ছে বহু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী । বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট বলছে, তৃতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতির প্রক্রিয়ায় বাংলা ও অর্থনীতি বিভাগে একজনও ভরতি হয়নি । এ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগগুলিতেও এখনও খালি রয়েছে বহু আসন । এই পরিস্থিতিতে আসনসংখ্যা ভরতির জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যুক্ত করা হচ্ছে নতুন প্রক্রিয়া । যেখানে ভরতিতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের জানাতে হবে "আমি আগ্রহী"।
চলতি বছর প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই সামনে আসে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতির বেহাল দশা । প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে বাংলা বিভাগে চার জন ভরতি হয়েছিলেন তো আবার ইংরেজিতে আট জন । 16টি কোর্স মিলিয়ে মোট 665টি আসনের মধ্যে মাত্র 179টি আসনে পড়ুয়া ভরতি হয়েছিল । দ্বিতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতি প্রক্রিয়া শেষের পরেও একই চিত্র বজায় থাকে । দেখা যায়, প্রথম মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতি হওয়ার পর বাকি থাকা আসনগুলিতে বাংলায় একজন, ইংরেজিতে ছ'জন, গণিতে চারজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে চারজন, এই রকম সংখ্যাতেই ভরতি হয়েছে পড়ুয়ারা ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করেছিল, পরবর্তী কয়েকটি মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতির পর বদলাবে সেই চিত্র । ভরে যাবে সব আসন । কিন্তু, সব আশাই সার । বদলায়নি কিছুই । অব্যাহত রয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভরতির বেহাল দশা । প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট বলছে, তৃতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে বাংলায় ও অর্থনীতিতে একজন পড়ুয়া ভরতি হয়নি । আবার ইংরেজিতে নয় জন, ভূগোলে আট জন, জিওলজিতে চার জন, হিন্দিতে তিন জন, ইতিহাসে চার জন, গণিতে সাত জন, দর্শনশাস্ত্রে এক জন, ফিজ়িক্সে দুজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এক জন, সোশিওলজিতে চার জন, স্ট্যাটিস্টিক্সে তিন জন, কেমিস্ট্রিতে দুজন এবং জীবন বিজ্ঞানে 16 জন পড়ুয়া ভরতি হয়েছে । সবমিলিয়ে মোট তিনটি মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভরতির পরেও প্রতিটি বিভাগেই খালি রয়েছে বহু আসন ।
বাংলায় মোট 38টির মধ্যে তিনটি মেধাতালিকার ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত মাত্র পাঁচ জন পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন । একইভাবে ইংরেজিতে 38টি আসনের মধ্যে 23টি, ভূগোলে 28টি আসনের মধ্যে 17টি, জিওলজিতে 31টি আসনের মধ্যে 23টি, ইতিহাসে 46টি আসনের মধ্যে 22টি, হিন্দিতে 30টি আসনের মধ্যে 15টি, জীবন বিজ্ঞানে 116টি আসনের মধ্যে 75টি, গণিতে 53টি আসনের মধ্যে 25টি, দর্শনশাস্ত্রে 20টি আসনের মধ্যে সাতটি, ফিজিক্সে 53টি আসনের মধ্যে 25টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 31টি আসনের মধ্যে দশটি, সোশিওলজিতে 32টি আসনের মধ্যে 16টি, স্ট্যাটিস্টিক্সে 28টি আসনের মধ্যে 14টি, কেমিস্ট্রিতে 22টি এবং ইকোনমিকসে মোট 53টি আসনের মধ্যে 31টি আসনে পড়ুয়া ভরতি হয়েছেন ।