কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি: করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠন ‘উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ (UUPTWA)। কিন্তু, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা সল্টলেকে পা রাখতেই তাঁদের আটক করে পুলিশ। একা হোক বা দল বেঁধে, ছাড় পাননি কেউই। করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড ও তার লাগোয়া এলাকায় কাউকে দেখে প্রাথমিক শিক্ষক মনে হলেই এদিন তাঁকে আটক করে বিধাননগর পুলিশ। যার জেরে এদিন মিছিল তো দূরস্থান, তেমনভাবে জমায়েত পর্যন্ত করতে পারেননি প্রাথমিক শিক্ষকরা।
PRT স্কেলের দাবিতে 2019 সালে অবস্থান-অনশন করেছিল UUPTWA। সেই সময় PRT স্কেলে বেতন না বাড়লেও কিছুটা বেতন বাড়িয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, বেতনবৃদ্ধির সেই নির্দেশিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, তাতে অনেক অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।
অভিযোগ, 2006 সালের 1 জানুয়ারি থেকে ন্যাশনাল এফেক্ট না দেওয়াই সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তুলনায় বেশি বেতন পাচ্ছেন জুনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এর প্রতিবাদে গত 28 জানুয়ারি পথে নামেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। তথ্যপ্রমাণসহ দেখা করেন স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারের সঙ্গে। সেদিনই কমিশনারের তরফে প্রতিশ্রুতি মেলে, প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি মেনে বর্ধিত বেতন কাঠামোকে 2006 সালের 1 জানুয়ারি থেকে ন্যাশনাল এফেক্ট দেওয়া হবে ৷ এর অনুমোদন পেতে ফাইল পাঠানো হবে অর্থ দপ্তরে ৷ অভিযোগ, সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হলেও অর্থ দপ্তরে গিয়ে আবারও বিষয়টি স্তব্ধ হয়ে যায় ৷ তাই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে শুক্রবার করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মহামিছিল ও লাগাতার অবস্থানের ডাক দেয় UUPTWA। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় ভেস্তে যায় গোটা কর্মসূচি ৷
আরও পড়ুন:ফের প্রশ্নের মুখে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, হাইকোর্টে রুজু মামলা
UUPTWA-র রাজ্য সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের লাগোয়া এলাকায় লাগাতার ধরনা ও সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, শিক্ষকরা জমায়েত হওয়ার আগেই পুলিশ অভাবনীয় কর্মতৎপরতা দেখিয়ে করুণাময়ীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলপূর্বক তুলে নিয়ে যায় এবং বিধাননগরের বিভিন্ন থানায় আটক করে রাখে। শিক্ষকদের অকথ্য গালিগালাজ, টানাহেঁচড়া করা হয় ৷ পুরুষ পুলিশ দিয়ে শিক্ষিকাদের গাড়িতে তোলা হয় ৷ যেন গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সৌজন্য, সংবিধান সবই কথার কথা। বাস্তবে এসবের তোয়াক্কা না করেই নির্বিঘ্নে দমনপীড়ন চালাতে পারে প্রশাসন। আমরা এই অত্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসনকে ধিক্কার জানাচ্ছি এবং রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি৷’’