কলকাতা, 9 জুন : কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ৷ সেখানে কৃষক আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল ৷ কিন্তু আদতে সেই বৈঠকই কার্যত বদলে গেল মোদি বিরোধিতার রণকৌশল তৈরির মঞ্চে ৷ বুধবার রাকেশ টিকায়েত-সহ বেশ কয়েকজন কৃষক নেতার সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন মমতা ৷ সেখানেই কৃষি ও কৃষক সংক্রান্ত নানা ইস্য়ুতে নরেন্দ্র মোদি তাঁর সরকারের সমালোচনায় সরব হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ৷
কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে দেশের করোনা পরিস্থিতির নানা দিক ৷ মমতার সাফ বার্তা, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ব্যর্থ কেন্দ্রের সরকার ৷ এমনকি, তাঁর অভিযোগ, মোদি সরকারের ভুল নীতির জন্যই দেশের নানা প্রান্তে অল্প বয়সীদের প্রাণ হারাতে হয়েছে করোনায় ৷
নরেন্দ্র মোদি বরাবরই ভারতের যুবশক্তি নিয়ে গর্ব প্রকাশ করে এসেছেন ৷ ভারতীয় নাগরিকদের একটা বড় অংশই 35 বছরের কম বয়সী ৷ এছাড়া 35 থেকে 50 বছরের মধ্যেকার কর্মক্ষম জনসংখ্যাও ভারতে নেহাত কম নয় ৷ লক্ষ্যণীয় হল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এই বয়সসীমার মানুষকে সবথেকে বেশি আঘাত করেছে ৷ এমনকী, এ নিয়ে আদালতকেও মুখ খুলতে হয়েছে ৷ প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের টিকা নীতি নিয়ে ৷
আরও পড়ুন :করোনার টিকা নীতিতে বদল এনে মমতার কথাই কি মানলেন মোদি ?
করোনা যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকাদানের পর কেন্দ্রীয় সরকার প্রথমে প্রবীণ নাগরিক ও পরে 45 বছরের বেশি বয়সীদের টিকাকরণের কথা ঘোষণা করেছিল ৷ কেন্দ্রের এই অবস্থান আদালতে ইতিমধ্যেই সমালোচিত হয়েছে ৷ চাপের মুখে সম্প্রতি ভারতের সমস্ত নাগরিকের (18 বছরের বেশি বয়সী) জন্য বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে নয়াদিল্লি ৷
আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, কেন্দ্রের উচিত ছিল অনেক আগেই অল্পবয়সীদের টিকার বন্দোবস্ত করা ৷ কারণ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তারাই সব থেকে বেশি ভাইরাসের শিকার হয়েছেন ৷ বুধবারের বৈঠকে এই বিষয়টিকেই স্পটলাইটে আনতে চেয়েছেন মমতা ৷ তাঁর সাফ কথা, কেন্দ্রের ভ্রান্ত টিকা নীতির জন্যই এত বেশি পরিমাণে তরুণ নাগরিকদের প্রাণ খোয়াতে হয়েছে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে ৷
আরও পড়ুন :কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ প্রচেষ্টাতেই যশের মোকাবিলা সহজ হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
একইসঙ্গে এত দেরিতে সকলের জন্য টিকাকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকেও তুলোধনা করেছেন মমতা ৷ তাঁর প্রশ্ন, এতদিন কেন এই ব্যবস্থা করা হয়নি ? মমতার যুক্তি, বিনামূল্যে টিকার জন্য কেন্দ্রের কোনও কৃতিত্ব নেই ৷ কারণ, এর জন্য যে টাকা খরচ করা হবে, তা আদতে আমজনতারই টাকা ৷ উপরন্তু মমতার প্রশ্ন, কেন পিএম কেয়ার্সের 35 হাজার কোটি টাকা খরচ করে আগেই সকলের জন্য টিকার নীতি নেওয়া হল না ? কোথায় খরচ হল সেই টাকা ?
এর পাশাপাশি, কেন্দ্র যেভাবে রাজ্যকে টপকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে করোনার টিকা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারও সমালোচনা করেছেন মমতা ৷ তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরোধী ৷