কলকাতা, 4 জুন : কিছুদিন পর হয়ত কলকাতার রাস্তায় গাড়ি বা বাসের বদলে বেশি চলতে পারে সাইকেল ৷ COVID-19 সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব নামক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং সর্বোপরি যানবাহনের অভাবে ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পেতে বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে এই সাইকেলই । এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন। এই অবস্থায় কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরের সাধারণ মানুষ যাতে সাইকেল ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য সরকারি অনুমোদনের আর্জি জানাল এই সংগঠন। ইতিমধ্যে এই আর্জি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন সরকারি এই চিকিৎসকরা।
কোরোনা মোকাবিলায় সাইকেল চালাতে সরকারি অনুমোদনের আর্জি চিকিৎসকদের
রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন মনে করছেন কোরোনা সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে সাইকেলই হতে পারে বিকল্প পথ। এই অনুমোদন জানিয়ে ইতিমধ্যে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন ৷
আগামী 8 জুন থেকে সব সরকারি এবং বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার। যদিও, ইতিমধ্যেই কিছু কিছু অফিস খুলে গিয়েছে। যার জেরে বহু মানুষকে অফিসে যেতে হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র অফিস নয়। অন্য বিভিন্ন পেশার বহু মানুষকেও রোজ বের হতে হচ্ছে। এই দিকে, কর্মস্থানে যাওয়া এবং আসার সময় রাস্তায় বাসের অভাবে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বহু মানুষকে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী না নেওয়ার কথা সরকার প্রথমে জানিয়েছিল। পরে জানানো হয়েছে, প্রতিটি সিটে যাত্রী নেওয়া যাবে। অটোর ক্ষেত্রেও প্রথমে দুইজন যাত্রী নেওয়ার কথা সরকার জানালেও পরে জানিয়েছে প্রতিটি সিটে যাত্রী নেওয়া যাবে। এই দিকে, দুই জন যাত্রী নেওয়ার কারণে অটোভাড়া দুই-তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে। বর্ধিত এই ভাড়া দিতে বহু মানুষকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রথমে রাস্তায় শুধু সরকারি বাস চললেও, বেসরকারি বাস চলছিল না। যদিও, শেষ পর্যন্ত বর্ধিত ভাড়ার বিনিময়ে বেসরকারি বাস পথে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে কলকাতায় ইতিমধ্যেই অবশ্য বহু মানুষ সাইকেলে চেপে কর্মস্থানে যাওয়া-আসা শুরু করে দিয়েছেন। আবার কেউ যেমন যানবাহনের অভাবে সাইকেলকে সঙ্গী করে নিয়েছেন, কেউ আবার সামাজিক দূরত্ব রক্ষার মাধ্যমে COVID-19-এর সংক্রমণ থেকে নিজে এবং পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে কর্মস্থানে যাওয়া-আসার জন্য বাহন হিসাবে সাইকেলকে বেছে নিয়েছেন।
তবে, রাজ্যের চিকিৎসক মহলরা চিন্তিত ৷ যদি প্রতিটি আসনে যাত্রী নেওয়া হয়,তাহলে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনাটা রয়েই যাচ্ছে ৷ অবশ্য তাঁরা একটি বিকল্প পথও বাতলেছেন ৷ একটি আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল। তাঁরা বলেছেন, এই অবস্থায় রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি সব অফিস দুটি শিফটে চালু হক ৷ তবে, শুধুমাত্র সকাল এবং, বিকাল, এই দুটি শিফটে অফিস চালুর আর্জি নয়। সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে কলকাতা সহ রাজ্যের অন্যান্য শহরে সাধারণ মানুষ যাতে সাইকেল ব্যবহার করতে পারেন, তার জন্য সরকারি অনুমোদনের আর্জিও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি লকডাউন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠন। ওই চিঠিতে এমনই জানানো হয়েছে, লকডাউনের পর্ব থেকে পুনরায় স্বাভাবিক আর্থ-সামাজিক অবস্থায় ফেরার জন্য একদিকে যেমন দিনমজুর এবং বিভিন্ন অসংগঠিত ক্ষেত্রের গরিব কর্মীদের রক্ষার বিষয়টি অত্যাবশ্যক। এছাড়াও রাজ্যের জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সংকট দেখা দিলে, তা দূর করা প্রয়োজন। অন্যদিকে, COVID-19-এর সংক্রমণ যাতে আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য সর্বাধিক স্তর পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।