কলকাতা, 30 জানুয়ারি : ছানি অপারেশন করাতে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেল চোখ । অপারেশনের সময় সংক্রমণ ঘটে যায় । যার জেরে, নষ্ট হয়ে যায় চোখ। শেষ পর্যন্ত রোগীর প্রাণ বাঁচাতে চোখটি বাদ দেওয়া হয় শরীর থেকে। এই ঘটনায় যাদবপুরের বেসরকারি এক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এক চিকিৎসকের নামে পুলিশে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ দায়ের হয়েছে । চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন রোগীর ছেলে।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান রোগীর আত্মীয়স্বজনরা ৷ শুধুমাত্র তাই নয়। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য ভবন এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন রোগীর ছেলে।
৬৫ বছর বয়সি এই মহিলার নাম ঝুনু দত্ত। তিনি বীরভূমের বাসিন্দা। তাঁর ছেলে অরিন্দম দত্ত পেশায় একজন অভিনেতা। তিনি দক্ষিণ কলকাতায় নেতাজি নগর থানা এলাকার বাসিন্দা। এই রোগীর দুই চোখে ছানি ধরা পড়ে। প্রথমে বাঁ দিকের চোখের ছানি অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অরিন্দম দত্ত বলেন, "যাদবপুরের এক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে 11 জানুয়ারি আমার মায়ের বাঁ চোখের ছানি অপারেশন করানো হয়। অপারেশন শেষ হয় দুপুরে। বিকালে ওয়ার্ডে চোখের পট্টি খুলে দেওয়া হয়। মা তখন দেখতে পাচ্ছিলেন।" তিনি বলেন, "এর এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের বাঁ দিকের চোখে বিভিন্ন কালার এফেক্ট দেখা দেয় । প্রচণ্ড জ্বালা, ব্যথা হতে থাকে । ডাক্তারকে অনেকবার ফোন করা সত্ত্বেও তিনি আসেননি । রাত 11 টা নাগাদ তিনি এসে বলেন, এটা ইনফেকশন হয়েছে। এটা হতেই পারে । চিকিৎসা করা হচ্ছে।"
অরিন্দম দত্ত বলেন, "এরপরে ওই ডাক্তার ১৪ জানুয়ারি বেসরকারি একটি সেন্টারে মাকে রেফার করেন। সেখানে USG করানোর পরে আমাদের জানানো হয়, মায়ের বাঁ দিকের চোখের রেটিনা চোকড হয়ে গেছে, ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে ৷ দৃষ্টিশক্তি চলে গেছে। যদি প্রচণ্ড যন্ত্রণা বা ব্যথা হয়, তা হলে এই চোখটি তুলে ফেলতে হবে।" এখান থেকে তিনি মাকে আবার যাদবপুরের বেসরকারি ওই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান । ১৬ জানুয়ারি তাঁর মাকে রেফার করে দেওয়া হয় রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমলোজিতে। সেখানে কোনও রকম সুব্যবস্থা ছিল না । যাদবপুরের এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে রোগীকে মুকুন্দপুরে অবস্থিত অন্য একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । তিনি বলেন, এরপরে অপারেশন করে তাঁর মায়ের বাঁ চোখ তুলে ফেলে দিতে হয়।
এই ঘটনায় ১৪ জানুয়ারি যাদবপুর থানায় ওই চিকিৎসকের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন অরিন্দম দত্ত। তিনি বলেন, "আলিপুর আদালতে কেস করেছি। স্বাস্থ্য ভবন এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিলে অভিযোগ জানাব।" এই অভিযোগের বিষয়ে বেসরকারি ওই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অশোককুমার ভদ্র বলেন, "অভিযোগ কেউ করতেই পারেন। তবে, অপারেশনগত কোনও ত্রুটি হয়নি, এটা সংক্রমণ ঘটিত ত্রুটি। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে রোগীর পোস্ট অপারেটিভ সব দায়িত্ব আমরা নিয়েছি, ব্যয়ভার বহন করেছি।"