কলকাতা, 23 ফেব্রুয়ারি : 16 ফেব্রুয়ারির ঘটনায় সরস্বতী পুজোর আয়োজনকারী পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই পাঁচজন 2 বছরের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না। 16 ফেব্রুয়ারির ঘটনা খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি ও বর্তমানে সংস্কৃত কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মণিশঙ্কর মণ্ডল, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য রাজা মেহেদি, দেবর্ষি রায়, তীর্থপ্রতিম সাহা ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্য কলকাতা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি রনি ঘোষ।
গত 16 ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আয়োজিত সরস্বতী পুজোয় 'টুম্পা সোনা' গানের তালে ছাত্র-ছাত্রীদের চটুল নাচের চিত্রে শিক্ষা মহল তো বটেই, অন্যান্য মহলেও নিন্দার ঝড় উঠেছিল। ঘটনাটি নজরে আসতেই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা জানিয়ে গোটা ঘটনার কঠোর তদন্ত হবে বলে জানিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী, ওইদিনের ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিতে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশীষ চট্টোপাধ্যায় ও রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস।
গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে আজ সিন্ডিকেটের বৈঠকে রিপোর্ট পেশ করে তদন্ত কমিটি। সর্বসম্মতিক্রমে সেই রিপোর্ট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সিন্ডিকেটের বৈঠকে। সিন্ডিকেটের বৈঠকে নেওয়া রেজ্যুল্যুশনে বলা হয়েছে, গত 16 ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের থেকে কোনও অনুমতি না নিয়েই সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে কিছু অনুষ্ঠানে আয়োজন করেছিল। তার মধ্যে গান ও সেই গানে নাচ ছিল, যা শিক্ষা মহল অত্যন্ত নিচু মানের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পরিপন্থী বলে মনে করেছে। কোরোনা অতিমারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবতীয় সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকার কারণে এই ঘটনা আরও বেশি অসঙ্গত বলে মনে হয়েছে। যে সময়ে শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না, সেখানে অনুমতি ছাড়াই এভাবে ক্যাম্পাসের ভিতরে এমন একটি অহেতুক অনুষ্ঠানের আয়োজন শিক্ষা মহলকে অবাক করে দিয়েছিল। তারপরেই এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে ও উপযুক্ত পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে।